করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হতে কোভিক বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত প্রশাসনের। গত দু’বছরের কড়াকড়িতে হাঁপিয়ে উঠেছেন অনেকেই। বর্তমানে কোভিডের গ্রাফ স্বস্তি দিলেও তা যাতে আবার অস্বস্তির কারণ না হয়ে ওঠে তার জন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎকদের। কোভিড নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিদায় নেয়নি। তাই ভিড়ে মাস্ক পরা এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার শর্ত ভুললে চলবে না বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
কোভিড সংক্রমণকে যে আয়ত্তে আনা গিয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই চিকিৎসকদের মধ্যে। একই সঙ্গে পরিকল্পনা করে বিধিনিষেধ তোলার সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী বলে মনে করছেন তাঁরা। পাশাপাশি সতর্ক থাকার পরামর্শও তাঁদের। একদিকে সাধারণ মানুষকে কোভিড মোকাবিলার প্রাথমিক শর্তগুলি মাথায় রাখার পরামর্শ। অন্যদিকে প্রশাসনকে কোভিড চিকিৎসার জন্য কয়েকটি হাসপাতালকে প্রস্তুত রেখে বাকি সব হাসপাতালেই অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
চিকিৎসক যোগীরাজ রায়ের মতে, অধিকাংশ মানুষই টিকা নিয়েছেন, অনেকের কোভিডও হয়ে গিয়েছে এ বার সময় এসেছে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার। কোভিডকে এখন এনডেমিক হিসাবে দেখলে বিধিনিষেধ শিথিল করে দেওয়া উচিত। নতুন করে কোভিডের বড়ো স্ফীতি আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তবে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে বলে জানান তিনি।
কেন্দ্রের থেকে আগেই কোভিড বিধি শিথিলের কথা জানানো হয়ে ছিল। ১ এপ্রিল থেকে রাজ্যে সেই নিয়ম চালু হতে চলেছে। চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের মতে,‘‘কোভিডের কঠিন নিয়ম গুলি তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সহজ নিয়মগুলির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। মাস্ক ভুলে যাওয়ার কথা কোনও নির্দেশিকায় বলা হয় নি। এটা যেন সাধারণ মানুষ ভুল না বোঝেন, প্রয়োজনে মাস্কের গুরুত্ব আমাদের বোঝাতে হবে।’’ অনির্বাণ আরও জানান, বিদেশে নতুন রূপ কোভিড সংক্রমণ হচ্ছে, আমাদের এখানে যে কোভিডের নতুন করে স্ফীতি হবে না, তার নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না।
একই মত চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসেরও, তাঁর কথায়,‘‘বাংলায় কোভিডের মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। কিন্তু মাস্কের ব্যবহার শেষ হয়ে যায়নি। এটা এখন আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে কড়াকড়ি শিথিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়।’’
করোনা কমাতে নৈশ কার্ফু-সহ কয়েকটি বিধিনিষেধ শিথিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সঙ্গে গত দু’বছরে যে সব অস্থায়ী কর্মচারীরা কোভিড মোকাবিলায় লড়াই করেছেন তাঁদের কথা ভুলতে চান না যোগীরাজ। তাঁর কথায় ‘‘কোভিডের সময় যে অস্থায়ী কর্মচারীরা যুদ্ধ জয়ের সৈনিক ছিলেন তাঁদের শংসাপত্রও দিয়েও যদি সম্মান জানানো যায় ভাল হত।’’ ওই শংসাপত্রের জোরেই হয়তো তিনি কোথাও চাকরি পেয়ে যেতে পারেন, আশা যোগীরাজের।