প্রতীকী ছবি।
দ্বিতীয় সুযোগেও কোভিড আবহে আশঙ্কাজনক রোগীর চিকিৎসায় তৎপরতার নজির তৈরির সুযোগ হারাল স্বাস্থ্য দফতর। চারদিনের লড়াই শেষে হার মানলেন হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের বাসিন্দা দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় (৫৪)। করোনা পরীক্ষার রিপোর্টের অপেক্ষায় বুধবার সকাল থেকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন মৃত প্রৌঢ়। সেই রিপোর্ট আসার পরে রোগীকে যখন আইসিইউয়ে নেওয়া হল ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। শনিবার সকালে হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় দেবাশিসের।
কিডনির অসুখে আক্রান্ত দেবাশিস ডায়ালিসিস চলাকালীন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। রাতে দেবাশিসককে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হলে কোভিড সন্দেহে তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেটি ছিল হয়রানির প্রথম পর্ব। যা নিয়ে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে কম জলঘোলা হয়নি। মেডিক্যাল কলেজ থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করানো হয়। রোগীর পরিজনদের দাবি, করোনা পরীক্ষা না করে রোগীকে আইসিইউয়ে নিতে চাননি চিকিৎসকেরা। মৃতের ছেলে দেবজিৎ জানিয়েছেন, বুধবার ভর্তি হলেও আশঙ্কাজনক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয় বৃহস্পতিবার। পরদিন সকালে রিপোর্ট আসার ১০ মিনিটের মধ্যে প্রৌঢ়কে আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে আইসিইউয়ে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
এ দিন দেবজিৎ বলেন, ‘‘দু’টি মেডিক্যাল কলেজ ফিরিয়ে দিলেও হাওড়া হাসপাতালে বাবাকে ভর্তি নেওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু আশঙ্কাজনক রোগীর আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই কেন? দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করে আরও আগে কি বাবাকে আইসিইউয়ে নেওয়া যেত না! আইসিইউয়ে যখন নেওয়া হল তখন সেখানকার চিকিৎসকেরাই বললেন, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ বস্তুত, র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট বা ট্রু-ন্যাটের মাধ্যমে প্রৌঢ় নেগেটিভ কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ ছিল বলে বক্তব্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশেরও।
এ বিষয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রোগীকে যে চিকিৎসকেরা দেখেছেন তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন। আমি কিছু বলতে পারব না।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেছেন, ‘‘ওই রোগীর চিকিৎসায় সমস্যা হয়নি। সৎকারও হয়ে গিয়েছে!’’