ফাইল ছবি
চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েও সে ফিরে দাঁড়ানোয় চিন্তিত স্বাস্থ্য শিবির। এমনিতে বাংলায় করোনার দৈনিক সংক্রমণ এখন তলানিতেই। কিন্তু উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ নিয়ে করোনা গোপনে ফের জাল বিস্তার করেছে কি না, তা জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে ফের শুরু করে দেওয়া হয়েছে সেন্টিনেল সমীক্ষাও। সেই সঙ্গে শেষ এক সপ্তাহে রাজ্যের ২৮টি জেলা (স্বাস্থ্য জেলা-সহ)-র প্রতিটি ব্লক এবং পুরসভা এলাকায় কত জন আক্রান্ত হয়েছেন, সেই বিষয়েও একটা স্বচ্ছ ধারণা পেতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই অনুযায়ী সম্প্রতি শেষ এক সপ্তাহের পরিসংখ্যান-সহ অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, কলকাতার উপকণ্ঠে সল্টলেক ও নিউ টাউনে এবং খড়্গপুরে শেষ সাত দিনে আক্রান্তের সংখ্যা দশের বেশি। ওই সব অঞ্চলে চলছে বাড়তি নজরদারি।
করোনার ওই মানচিত্রকে বিভক্ত করা হয়েছে তিনটি জ়োনে। যে-সব ব্লক বা পুরসভায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০ কিংবা তার বেশি, সেই সমস্ত এলাকাকে গোলাপি কালিতে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা দুই থেকে পাঁচ কিংবা তার বেশি, সেই এলাকাকে কালো এবং যে-সব অঞ্চলে সংখ্যাটা শূন্য থেকে এক, সেই জায়গাকে সবুজ কালিতে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্যে সামগ্রিক ভাবে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৫০-র নীচেই রয়েছে। কিন্তু কোন এলাকা বা ব্লকে সংক্রমণ বেশি, সেটাই পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’’
গত এক সপ্তাহে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এলাকায় ১২ জন এবং বিধাননগর পুর এলাকায় ১১ জন করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। একই ভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর পুর এলাকা এবং লাভপুর ব্লককে (১৫টি) চিহ্নিত করা হয়েছে গোলাপি কালিতে। পাশাপাশি পাঁচ কিংবা তার বেশি সংখ্যক আক্রান্তের হদিস মিলেছে কলকাতা পুরসভার ৬৯, ৭০, ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে। একই অবস্থা হাওড়া, বাঁকুড়া পুরসভায়। পাঁচ থেকে দুই পর্যন্ত আক্রান্তের তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ দমদম, কামারহাটি, বারাসত, রাজপুর-সোনারপুর, শিলিগুড়ি পুরসভা। কলকাতার ৬৩, ১০৩, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে তিন জন করে এবং ৬৪, ৬৫, ৬৮, ৮১, ৯২, ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
পাঁচ থেকে দুই পর্যন্ত আক্রান্তের তালিকায় রয়েছে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর-১, পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা-১ এবং হাওড়ার সাঁকরাইল ব্লক। আবার মুর্শিদাবাদের আটটি পুর এলাকাই সংক্রমণ-শূন্য। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনার নির্দিষ্ট একটি বা দু’টি জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। সেখানে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। জনস্বাস্থ্যের চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘এখনই যে রাজ্যে কোভিড-আক্রান্তের সংখ্যা খুব বেড়েছে বা বাড়ছে, তা নয়। কিন্তু যে-সব অঞ্চলে এখনও আক্রান্তের খোঁজ মিলছে, সেখানে নজরদারি জোরদার চালিয়েই যেতে হবে। রুটিন নজরদারি চলতে থাকলে কোন অঞ্চলে কেস বাড়ছে এবং নতুন কোনও স্ট্রেন আসছে কি না, তার পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব।’’