কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের দক্ষিণ এবং উত্তরাংশে করোনা-রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
সাপ্তাহিক লকডাউনের কড়া বিধিনিষেধ সত্ত্বেও যেন কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না করোনা-সংক্রমণের হানা। শুক্রবার রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা আগেকার যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এ দিন রাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৪৯৬ জন। ওই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। সব মিলিয়ে এ রাজ্যে আক্রান্তের মোট সংখ্যা পার করে গেল ৭০ হাজারের গণ্ডি। এখনও পর্যন্ত মোট ৭০ হাজার ১৮৮ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
সংক্রমণের নিরিখে রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থা কলকাতা শহরের। কলকাতায় করোনা রোগীর সংখ্যা এই মুহূর্তে সাড়ে ২১ হাজার পার করে গিয়েছে। শহরের মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ২১ হাজার ৬৩৯।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬৭০ জন। তবে স্বস্তির কথা শহরে মোট আক্রান্তের মধ্যে ১৪ হাজার ৫০৬ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তবে ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। এই নিয়ে শহরে মোট ৭৬০ জনের কোভিড-রোগীর মৃত্যু হল। এই মুহূর্তে শহরে সক্রিয় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৩৭৩।
এ শহরের পাশাপাশি রাজ্যের দক্ষিণ এবং উত্তরাংশে করোনা-রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। কলকাতার পরেই স্রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ১৩১। অন্য দিকে, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, নদিয়া এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের করোনা-পরিস্থিতিও ভয়াল আকার নিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫ হাজার ১৮২, হাওড়ায় ৭ হাজার ৭৫০, হুগলিতে ৩ হাজার ৪১১, নদিয়ায় ১ হাজার ১৬,পূর্ব মেদিনীপুরে ১ হাজার ৫১৮ এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে এখনও পর্যন্ত ১ হাজার ১৮৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। দক্ষিণের পাশাপাশি রাজ্যের উত্তরের জেলাগুলিতেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। মালদহে ২ হাজার ২৮৭, জলপাইগুড়িতে ১ হাজার ৩১৪, উত্তর দিনাজপুরে ১ হাজার ১৫৭, দক্ষিণ দিনাজপুরে ১ হাজার ১৫৫ এবং দার্জিলিঙে ২ হাজার ১৬৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এক দিকে, রাজ্য জুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিলেও অন্য দিকে স্বস্তির আভাসও মিলেছে। কোভিড-১৯ টেস্টের হার বাড়ানো হয়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। তাতে দেখা গিয়েছে, সংক্রমণের হার বা পজিটিভিটি রেট কমেছে। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত জনের কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৩ জনের কোভিড-পরীক্ষা করানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়ে হয়েছে ১৩.৪৯ শতাংশ। তবে এ দিন সংক্রমণের হার কমে হয়েছে ১৩.১৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশের মধ্যে সেরার সেরা মমতার গ্রিভান্স সেল ‘ই-সমাধান’
আরও পড়ুন: করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে টিকে থাকতে কী কী প্রয়োজন? কী বললেন চিকিৎসকেরা?
সেই সঙ্গে স্বস্তির জোগাচ্ছে কোভিড-রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার হারও। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৪৮ হাজার ৩৭৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। যা শতাংশের নিরিখে ৬৮.৯২।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)