প্রতীকী ছবি।
বেশ কয়েক বছর ধরে খবরের শিরোনামে বার বার উঠে আসছে মিডল্যান্ড পার্ক। সৌজন্যে সারদা মামলা। ওই বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের অফিস ছিল সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে মিডল্যান্ড পার্কের এই বহুতলে। তার দু’টি ঘর ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে মালিক পক্ষ। আদালত জানিয়েছে, সুদীপ্তের অনুমতিসাপেক্ষে ওই জোড়া ঘর মালিক পক্ষকে ফেরত দেওয়া যেতে পারে।
বহুতলের এক তলায় ওই দু’টি ঘর আদতে গ্যারাজ। সেগুলিও ভাড়া নেন সুদীপ্ত। সেখানে সারদার কম্পিউটার ও অন্যান্য সামগ্রী এখনও আছে। ওই দু’টি ঘরের জন্য ২০১৩ সালের মার্চে শেষ বারের মতো ২৫ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া পেয়েছিলেন ঘরের মালিক ভাবনা সারোগী। ওই বছরের এপ্রিলে কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে সুদীপ্ত এবং সারদার অন্যতম কর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর থেকে জোড়া ঘরের ভাড়া বন্ধ। ভাবনা আদালতে জানান, অফিস প্রথমে রাজ্য পুলিশ, পরে সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকায় তিনি সেই জায়গা ব্যবহার করতে পারছেন না। এখনও সেই বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন করা আছে।
মিডল্যান্ড পার্ক নামে ওই চার তলা ভবনের প্রোমোটার ছিলেন চিত্ত সেন নামে সল্টলেকেরই এক বাসিন্দা। তাঁর কাছ থেকে চারতলা ও তেতলা ভাড়া নিয়েছিলেন সুদীপ্ত। সেখানেই ছিল সারদার সদর দফতর। তিনি নিজে এবং দেবযানী ওই অফিসেই বসতেন। সেই জায়গাটাও এখন সিল করা আছে। চিত্তবাবুর জামাই তাপস মান্না বিষয়টি দেখাশোনা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ফোন করা হলে তাপসবাবু বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কিছু বলব না।’’
চিত্তবাবুর কাছ থেকেই একতলার দু’টি গ্যারাজ ঘর কিনেছিলেন ভাবনা। ভাবনার আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী জানান, ওই ৫০০ বর্গ ফুট জায়গাও ভাড়া নিয়েছিলেন সুদীপ্ত। ভাবনার স্বামী মণীশ সারোগী বলেন, ‘‘২০১০ সালে আমরা সারদাকে দু’টি গ্যারাজ ঘর ভাড়া দিই। সুদীপ্ত গ্রেফতার হওয়ার পরে বেশ কয়েক বার রাজ্য পুলিশ ও সিবিআই-কে বলি, ওই জায়গা আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’
আদালত জানিয়েছে, সুদীপ্তের আপত্তি না-থাকলে ওই গ্যারাজ ঘর ফেরত দেওয়া যাবে। সুদীপ্তের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে ভাবনাকেই। ওই জায়গা ফেরত দিতে তাদের কোনও আপত্তি নেই বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই। ওই অফিসে এখনও বেশ কিছু চেয়ার-টেবিল-কম্পিউটার আছে। আদালত ভাবনাকে সেই সব মালপত্র অন্য কোথাও রাখার বন্দোবস্ত করারও নির্দেশ দিয়েছে।