Gangster Subodh Singh

বিহারের জেলের ‘বেয়াদপি’ বাংলায় বরদাস্ত নয়, জেলে বন্দি কুখ্যাত সুবোধের উপর কড়া নজর কারা দফতরের

বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসা পর্যন্ত বেপরোয়া মনোভাব দেখিয়ে পুলিশকর্তাদের ‘চাপে’ ফেলার চেষ্টা করেছেন সুবোধ সিংহ। তাই তাঁর বিষয়ে প্রথম থেকেই কড়া হতে চায় রাজ্য কারা দফতর।

Advertisement

অমিত রায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ১২:০৩
Share:

সুবোধ সিংহ। —ফাইল চিত্র।

বিহারের জেলের ভিতরের ‘বেয়াদপি’ বাংলায় কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিহারের ‘গ্যাংস্টার’ সুবোধ সিংহ ওরফে দিলীপের কার্যকলাপে তাই প্রথম থেকেই কড়া নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য কারা দফতর। সোমবার বিহারের বেউড় জেল থেকে রাজ্য পুলিশের সিআইডি অফিসারেরা তাঁকে আসানসোল জেলে নিয়ে এসেছেন। বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসা পর্যন্ত বেপরোয়া মনোভাব দেখিয়ে পুলিশকর্তাদের ‘চাপে’ ফেলার চেষ্টা করেছেন সুবোধ। তাই তাঁর বিষয়ে প্রথম থেকেই কড়া হতে চাইছে রাজ্যের কারা দফতর। কারামন্ত্রী অখিল গিরি সুবোধের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছেন। সুবোধের বিষয়ে খুঁটিনাটি জানার পর আসানসোল জেলে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সুবোধ প্রসঙ্গে যাবতীয় তথ্য নেবে ওই প্রতিনিধিদল। তার পরে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেবে কারা দফতর।

Advertisement

কারা দফতর সূত্রের খবর, আসানসোল জেলে সুবোধকে নিয়ে কোনও ‘সন্দেহ’ তৈরি হলে তাঁকে যাতে রাজ্যের অন্য কোনও জেলে স্থানান্তরিত করা যায়, সেই ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। সঙ্গে সংশোধনাগারের মধ্যে কড়া নজরও রাখা হবে বিহারের এই কুখ্যাত অপরাধীর উপর। বিহারের বেউড় জেলে বসেই গত ছ’বছর নিজের অপরাধ জগতের সাম্রাজ্য বাড়িয়েছেন সুবোধ। খুন, ডাকাতি, রাহাজানির মতো অপরাধ সংগঠিত করেছেন জেলে বসেই। বিহারের জেলে বসেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও অপরাধমূলক কার্যকলাপের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। সেই কারণেই তাঁর উপর নজর রাখতে চাইছে রাজ্য কারা দফতর। প্রথম থেকেই গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছেন দফতরের আধিকারিকেরা।

বেউড় থেকে আসানসোল জেলে আনার সময় সিআইডির আধিকারিকদের সঙ্গে সুবোধের ব্যবহার কেমন ছিল, সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনেছেন কারা দফতরের কর্তারা। ‘প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট’-এ বাংলায় নিয়ে আসার জন্য বেউড় জেলে যাওয়া সিআইডির তদন্তকারীদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে সুবোধ বলেছিলেন, ‘'আমার বিরুদ্ধে কী তথ্যপ্রমাণ রয়েছে? কেউ অভিযোগ করলেই বা কিছু বললেই প্রমাণ হয়ে যায় না যে, আমি ওই অপরাধে জড়িত। কোনও সাক্ষ্য ও নথিপত্র না রেখে কাজ করাই আমার স্টাইল। মামলা তো করলেন! প্রমাণ করতে পারবেন তো!’’ আসানসোল জেল গেটের সামনে এসেও জেল কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সুবোধ। হুমকির সুরে বলেছিলেন, ‘‘আপ লোগোঁ কো কিমত চুকানা পড়ে গা। অওর আপ সব কা বালবাচ্চে কো ভি ভুগনা হোগা।’’ অর্থাৎ, আপনাদের এর দাম দিতে হবে। আপনাদের সন্তান-সন্ততিদেরও এর ফল ভোগ করতে হবে।

Advertisement

সুবোধের ওই সমস্ত কথাবার্তা কানে গিয়েছে মন্ত্রী অখিলের। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘এটা বিহার নয়, বাংলা! তা ওই অপরাধীকে বুঝতে হবে। জেলের ভিতরে যদি কোনও রকম উৎপাতের ঘটনা ঘটায়, তবে ওকে অন্য জেলে পাঠানোর বন্দোবস্তও আমরা করতে পারি। জেলের ভিতর থেকে যাতে সুবোধ কোনও অপরাধমূলক কাজকর্ম না করতে পারে, সে বিষয়েও আমরা সব সময়ে নজর রাখব।’’ আপাতত আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বেউড়ের গ্যাংস্টারকে ‘নিয়ন্ত্রণে’ রাখা। সে কারণেই প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে তাঁর সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে চাইছে রাজ্য কারা দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement