লকডাউনে শুশান শিলিগুড়ি।—ছবি এএফপি।
কার্যত পুরনো রূপেই ফিরল নতুন পর্বের লকডাউনের নিয়ন্ত্রণবিধি। সোমবার সপ্তাহে দু’দিন করে লকডাউন ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার সেই লকডাউনের সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করল নবান্ন। গত মার্চে লকডাউনের শুরুতে যেমন নিয়ন্ত্রণবিধি কার্যকর হয়েছিল, এই পর্বে গতিবিধিতে তেমন কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনল রাজ্য।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, গত ৯ জুলাই থেকে শুরু হওয়া বৃহত্তর কন্টেনমেন্টভিত্তিক লকডাউন যেমন চলছিল, তেমনই চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। ১৫ জুলাই থেকে শহরভিত্তিক লকডাউন পদ্ধতিও চালু থাকবে। এর সমান্তরালে সপ্তাহে দু’দিন করে গোটা রাজ্যে সার্বিক লকডাউন কার্যকর হতে চলেছে। চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতি ও শনিবার এবং পরের সপ্তাহে বুধবার সেই সার্বিক লকডাউন হবে। লকডাউনের প্রত্যেক দিন ভোর ছ’টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে। তা ছাড়া, প্রতি দিন রাত ১০টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত ব্যক্তিবিশেষের গতিবিধিতে (জরুরি ছাড়া) যে নিয়ন্ত্রণ ছিল, তা বহাল থাকবে। প্রসঙ্গত, লখনউ-সহ গোটা উত্তরপ্রদেশে সপ্তাহে দু’দিন করে লকডাউন হচ্ছে। জম্মুতেও সম্প্রতি তা শুরু হয়েছে। বেঙ্গালুরুতে আজ বুধবার পর্যন্ত চলছে সাত দিনের লকডাউন।
রাজ্য জুড়ে লকডাউনের দিনগুলিতে সরকারি এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি পরিবহণও চলবে না। তবে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত গতিবিধি, ওষুধের দোকান, আইনশৃঙ্খলা, সংশোধনাগার, দমকল, বিদ্যুৎ, আন্তঃরাজ্য এবং আন্তঃরাজ্য পণ্য পরিষেবা, সংবাদমাধ্যম, রান্না করা খাবারের হোম ডেলিভারিতে রাশ টানা হয়নি। পাশাপাশি, ছাড় দেওয়া হয়েছে চালু শিল্প উৎপাদন প্রক্রিয়ায়। যে সব কারখানায় শ্রমিকরা থেকে কাজ করতে পারেন, সেগুলিকেও নিয়ন্ত্রণের আওতায় রাখা হয়নি। চা-বাগানের কাজও নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। প্রথম লকডাউনের শুরুতে শেষোক্ত কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণবিধির আওতায় ছিল। ফলে প্রশাসনিক মহলের ব্যাখ্যা, সামগ্রিকভাবে বাজার এলাকাগুলি, যেখানে জনসমাগম বেশি, সেগুলি বন্ধ থাকবে লকডাউনের দিনগুলিতে।
গত শনিবারই রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, পশ্চিমবঙ্গের কোভিড-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তাই এখনই সার্বিক লকডাউনের পথে হাঁটতে চাইছে না সরকার। পরিস্থিতির গুরুতর পরিবর্তন হলে সার্বিক লকডাউনের কথা ভাবা যেতে পারে। সেই ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য সরকার সাপ্তাহিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত জানায়। প্রসঙ্গত, শুরুর লকডাউনে সরকার একাধিক বার জানিয়েছিল, বিধি না মানলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। তার পরেও বিধি মানেনি একাংশ। আনলক পর্বের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়লেও অনেকের মধ্যে গা-ছাড়া মনোভাব আরও বেশি করে দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন কড়া না হলে আগের মতোই ‘ফস্কা গেরো’ অবস্থা হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
আরও পড়ুন: নিশ্চিন্ত থাকা যাবে না কোভিড সেরে গেলেও
আরও পড়ুন: ফিল্টার থাকলে বাতিল এন-৯৫