এই বাসেই ফিরছেন পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
ভিন্রাজ্য থেকে পড়ুয়াদের ফেরাতে চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখা হবে না বলে দু’দিন আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো লকডাউনের জেরে রাজস্থানের কোটায় আটকে পড়া পড়ুয়াদের বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। বুধবারই ২৫০০-র বেশি পড়ুয়া নিয়ে কোটা থেকে রওনা দিচ্ছে ১০১টি বাস।
ঠিক হয়েছে, পড়ুয়াদের নিয়ে কলকাতা শিলিগুড়ি এবং আসানসোল, এই তিনটি জোনে এসে পৌঁছবে বাসগুলি। সেখান থেকে ফের রাজ্য সরকারের ব্যবস্থায় নিজেদের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন ওই পড়ুয়ারা। তবে কোটায় বাসে ওঠার আগে এবং এ রাজ্যে পৌঁছনোর পর তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে বলে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কোটার একাধিক প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন বাংলার বহু পড়ুয়া। করোনার মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণার পর সেখানে আটকে পড়েন তাঁরা। নিরাপদে তাঁদের বাড়ি ফেরাতে গত এক মাস ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছিলেন তাঁদের অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন: দেশে ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণ ১৮১৩ জনের, মোট আক্রান্ত ৩১৭৮৭
কিন্তু লকডাউনের জেরে একাধিক রাজ্যের সীমানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই সমস্ত পড়ুয়াদের ফেরানো সম্ভব হচ্ছিল না। দিন কয়েক আগে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন সে সমস্যার কথা তুলে ধরেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। তিনি জানান, ৩০০ বাসের ব্যবস্থা করে, নাইট হল্ট করিয়ে পড়ুয়াদের ফেরানো খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার। তা সত্ত্বেও চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখেনি রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু তাঁদের রাজ্যে ফেরাতে যে সব রাজ্যের ভিতর দিয়ে আনতে হবে, সে সব রাজ্য অনুমতি দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: সোমবার থেকে গ্রিন জোনে জেলার মধ্যে ২০ যাত্রী নিয়ে চলবে বাস: মুখ্যমন্ত্রী
মুখ্যমন্ত্রীর টুইট।
সোমবার এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে লেখেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টির দিকে নজর রাখছি। প্রত্যেকের কাছে যাতে সাধ্যমতো সাহায্য পৌঁছয়, তার জন্য চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখছি না। ইতিমধ্যেই পড়ুয়াদের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বাংলার যে সমস্ত পড়ুয়া কোটায় আটকে রয়েছেন, খুব শীঘ্রই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন তাঁরা।’’
লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীও কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরেই সক্রিয় হয়েছিল কোটা থেকে বাংলার পড়ুয়াদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে। রাজস্থানে কংগ্রেসের সরকার থাকার সুবাদে তাঁর পক্ষে যোগাযোগ করা অপেক্ষাকৃত সহজ হয়েছিল। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতর কাছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে বার্তা গিয়েছিল অধীর চৌধুরীর সুপারিশের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার। ফলে রাজস্থানের সরকারও পশ্চিমবঙ্গ থেকে কোটায় যাওয়া পড়ুয়াদের বাংলায় ফেরানোর বিষয়ে তৎপর হয়। তবে এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমতি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগও পদক্ষেপও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে পদক্ষেপ হতেই পড়ুয়াদের ফেরানোর ব্যবস্থা মসৃণ ভাবে হয়ে গিয়েছে।