ছবি এএফপি।
লকডাউন ধীরে ধীরে উঠতে থাকায় স্বাভাবিক পরিবহণের চাহিদাও বাড়ছে। এই অবস্থায় বেসরকারি পরিবহণ সচল করার তাগিদে ভাড়া না-বাড়ানোর অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে কিছুটা নমনীয় হল রাজ্য সরকার। রবিবার একটি ভাড়া নিয়ন্ত্রক কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে তারা। ভাড়া বৃদ্ধির দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত, কমিটি তা খতিয়ে দেখবে।
আপাতত বাস ও মিনিবাসের মালিকদের দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে পরিষেবা ফের সচল করাই সরকারের লক্ষ্য। কিন্তু আজ, সোমবার পথে ৩০ শতাংশের বেশি বেসরকারি বাস বা মিনিবাস নামার কোনও সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। প্রাক্-করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ ভাবে রোজ ৮৫০০ বেসরকারি বাস ও মিনিবাস নামত। বাস সংগঠনগুলির ইঙ্গিত, তার মধ্যে আজ ২০০০ থেকে ২৫০০ বাস-মিনিবাস নামতে পারে। তবে ১০০ শতাংশ সরকারি বাস বেরোবে বলে প্রশাসনের খবর।
আজ থেকে সরকারি অফিসে থাকছে ৭০% কর্মীর হাজিরার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বেসরকারি অফিসেও কর্মীর সংখ্যা বাড়ার কথা। ধর্মস্থান, হোটেল, রেস্তরাঁ খুলছে। ফলে বেশি মানুষ রাস্তায় নামবেন।
আরও পড়ুন: কলকাতা মেডিক্যাল, বাঙুরে বৃদ্ধি পাচ্ছে সুস্থ হওয়ার হার
এই পরিস্থিতিতে বাস পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা এ দিন বিকেলে বাস-মালিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানেই ভাড়া নিয়ন্ত্রক কমিটি গঠন, ভাড়া বৃদ্ধির দাবি খতিয়ে দেখার কাজ সরকারি ভাবে শুরু করার কথা জানানো হয়। আপাতত সব রুটে পরিষেবা সচল করার আবেদন জানিয়ে সংগঠনগুলিকে দৈনিক বাস চালানোর খরচের হিসেব জমা দিতে বলা হয়েছে। সেই তথ্য খতিয়ে দেখে ৩০ জুনের মধ্যে নিজেদের পর্যবেক্ষণ জানাতে পারে তিন সদস্যের কমিটি।
আরও পড়ুন: বেশি ভয় নিয়েই আজ বেশি কাজে, লকডাউন শিথিল পর্বের দ্বিতীয় দফা শুরু
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, হয়রানি ঠেকাতে সব রুটে পরিষেবা সচল করার আবেদন জানানো হয়েছে বাস-মালিকদের। সর্বোচ্চ ক্ষমতায় প্রায় দেড় হাজার বাস আজ রাস্তায় নামাতে প্রস্তুত সরকার। বাস-মালিকেরা যাতে অন্তত দুই-আড়াই হাজার বাস নামান, সেই আবেদন জানিয়েছে সরকার। বাস-মালিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, দীর্ঘ লকডাউনে তাঁদের আর্থিক সঙ্গতি ধাক্কা খেয়েছে। ফলে পূর্ণ ক্ষমতায় বাস নামাতে সময় লাগবে। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অন্তত ৩০-৩৫% বাস যাতে অব্যশই নামানো যায়, সেই চেষ্টা করছি।’’ বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সহ-সভাপতি টিটো সাহা বলেন, ‘‘বাস চললে যাত্রী পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। আয় ও ব্যয়ের মধ্যে দ্রুত সমতা না-এলে মালিকদের পক্ষে পরিষেবা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।’’
যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সন্ধ্যায় কর্তাদের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক করেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তবে এই বিষয়ে পরে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।