ঝাড়খন্ড রওয়ানা হওয়ার আগে ইছাপুরে পরিযায়ী শ্রমিকরা। সঙ্গে কংগ্রেস নেতা অশোক ভট্টাচার্য।—নিজস্ব চিত্র।
লকডাউন চলাকালীন দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিক বার চিঠি দিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন রাজ্যে আটকে থাকা মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছেন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সহায়তা কাজে লাগিয়ে। রেলমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন নিয়মিত। এ বার পরিযায়ী শ্রমিক ও আটকে পড়া অন্যান্য বিপন্ন মানুষের তথ্য দিয়ে সরকারের পাশে দাঁড়াতে অ্যাপ চালু করে ময়দানে নেমে গেলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী।
অধীরবাবু নিজে নির্বাচিত বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে। আর মুর্শিদাবাদ জেলা থেকেই এ রাজ্যের সব চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যান। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে অজস্র ফোন পেয়ে নিজেদের উদ্যোগে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার পরে এ বার আটকে থাকা মানুষের ঘরে ফেরার বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যে অ্যাপ-এ নাম-ঠিকানা নথিভুক্ত করাচ্ছেন অধীরবাবু। কোন রাজ্যের কোন জেলায় কোন ব্লকে কে আটকে আছেন, তার বিশদ তালিকা নিয়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসনের হাতে। লোকসভার বিরোধী দলের নেতার দফতর সূত্রে খবর, কয়েক দিনে মুর্শিদাবাদ জেলারই প্রায় এক লক্ষ ৬০ হাজার মানুষের নাম-ঠিকানা পাওয়া গিয়েছে। যা পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের কাছে। মুখ্যসচিব প্রাপ্তিস্বীকার করে জানিয়েছেন, কী ভাবে কী ব্যবস্থা করা যায়, প্রশাসন তা দেখছে।
কেরল, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য থেকেই ফিরতে চাওয়া বেশি মানুষ যোগাযোগ করছেন। তাঁরা কী কাজ করতে গিয়েছিলেন, তা জানতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে এঁদের সিংহ ভাগই নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। অধীরবাবু বলছেন, ‘‘যথাসাধ্য সাহায্য বিপন্ন মানুষগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করেছি। এখন যাঁরা ফিরতে চাইছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করছি রাজ্য ধরে ধরে। প্রতিটা রাজ্যকে জানাচ্ছি তাদের ওখানে কত মানুষ ফেরার অপেক্ষায় আছেন।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘দেশের এত প্রান্তে এত মানুষ এ ভাবে আটকে আছেন, কোনও ধারণা ছিল না! মেঘালয় থেকেও ফোন পেয়েছি। সরকারে না থাকি, দরকারে থাকার চেষ্টা করছি!’’
আরও পড়ুন: বেশি মিউটেশনেই কি মৃত্যু বেশি কলকাতায়
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ঘোষণা করেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার খরচ কংগ্রেস দেবে। সেই ঘোষণা মোতাবেক ঝাড়খণ্ডে ফিরে যাওয়া কিছু শ্রমিকদের হাতে এ রাজ্যে প্রথম বার খরচের টাকা তুলে দিয়েছে কংগ্রেস। হাজারিবাগের বাসিন্দা ১৬ জন শ্রমিক কাজে এসে আটকে ছিলেন ইছাপুরের নবাবগঞ্জ এলাকায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র তাঁদের ফেরার ব্যবস্থার অনুমতি চেয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তীর কাছে। ইতিমধ্যে এক শ্রমিকের মেয়ের মৃত্যুসংবাদও এসেছিল। প্রশাসন অনুমতি দেওয়ার পরে নোয়াপাড়া শহর কংগ্রেসের সভাপতি অশোক ভট্টাচার্য শ্রমিকদের খরচের টাকা দিয়ে তাঁদের রওনা করিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঘরে শিশু, ভয়ে ছুঁতে পারেন না করোনা-যোদ্ধা মা
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)