ছবি পিটিআই।
করোনায় নতুন সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের মাঝেই দৈনিক টিকাকরণে নতুন রেকর্ড গড়ল রাজ্য। এই প্রথম রাজ্যে এক দিনে সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি জনকে টিকা দেওয়া হল। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তবে দৈনিক টিকাকরণে রেকর্ড গড়লেও যে ভাবে দিন কয়েক ধরে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, তাতে স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
শনিবার রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ ১৯ মার্চ সারা দিনে রাজ্যের মোট ৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ৭২৮ বাসিন্দা টিকা নিয়েছেন। যা এখনও পর্যন্ত এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক টিকাকরণের নজির।
১৬ জানুয়ারি দেশে প্রথম টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। প্রথম দফার ওই কর্মসূচিতে দেশের সমস্ত রাজ্যের মতোই পশ্চিমবঙ্গেও টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়। ওই দফায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করা মানুষজনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। এর পরের দফায় ১ মার্চ থেকে ষাটোর্ধ্ব এবং ৪৫ থেকে ৪৯ বছরের বেশি বয়সি অথচ কো-মর্বিডদের টিকাকরণের কর্মসূচি নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গোটা দেশের মতো এ রাজ্যেও চলতি মাস থেকে সেই কর্মসূচি চলবে আগামী ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত।
রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর সূত্রে খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৫১০টি টিকাকরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি টিকা নিয়েছেন। যদিও শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই সময়ের মধ্যে ৩ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯৮ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে রাতে একটি বিবৃতিতে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, টিকাকরণ ছাপিয়ে গিয়েছে সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি।
টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর গত ৬ মার্চ প্রথম বার ১ লক্ষের গণ্ডি পার করেছিল এ রাজ্য। ওই দিন স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, তার আগের ২৪ ঘণ্টায় মোট ১ লক্ষ ১০ হাজার ৫০৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। এর পর প্রথম বার এক দিনে ২ লক্ষ টিকা দেওয়া হয়েছিল ১৭ মার্চ। সংখ্যার নিরিখে তা ছিল ২ লক্ষ ৭৮ হাজার ৯০৩। তার পর ১৯ মার্চ দৈনিক টিকাকরণে নতুন রেকর্ড গড়ল রাজ্য সরকার।
দৈনিক টিকাকরণ বাড়লেও নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে বই কমেনি। শনিবার রাতে স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৭৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র কলকাতাতেই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ১২৫-এ। ফলে বার বার হাত ধোওয়া, সঠিক ভাবে মুখোশ পরা অথবা শারীরিক দূরত্ব বজার রাখার মতো করোনাবিধি মেনে চলার গুরুত্বের কথা ফের মনে করিয়ে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের আশঙ্কা, করোনাবিধি মেনে না চললে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, গুজরাত, কেরল বা কর্নাটকের মতো এ রাজ্যেও সংক্রমণের গতি বাড়তে পারে।