লকডাউনের মধ্যে নতুন করে যে সব ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে, তার তালিকা প্রকাশ করল রাজ্য সরকার।
রাজ্যে আরও বাড়ল করোনাভাইরাস সংক্রমণের কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা। আগে এই সংখ্যা ছিল ৪৪৪। রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও ৭২টি বেড়ে মোট কন্টেনমেন্ট জোন হয়েছে ৫১৬টি। কলকাতাতেই ৩১৮টি কন্টেনমেন্ট জোন। তার মধ্যেই আজ সোমবার নতুন করে লকডাউনের মধ্যে যে সব ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে, তার তালিকা দিল রাজ্য সরকার।
ঘোষণা হয়েছিল আগেই। সেই অনুযায়ী নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে নতুন আরও কোন কোন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে সোমবার থেকে, সেগুলি জানিয়েছেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। তার মধ্যে অন্যতম গ্রিন জোনে বাস চলাচল। তবে ২০ জন যাত্রী অথবা সিট সংখ্যার অর্ধেক যেটা কম হবে সেই সংখ্যক যাত্রীই বাসে তোলা যাবে এবং বাসগুলিকে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মাস্ক ছাড়া কোনও যাত্রী যাতে বাস ভ্রমণ করতে না পারেন, সেটাও দেখতে হবে।
অত্যাবশ্যকীয় ছাড়াও এ বার অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন দোকানও খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। স্ট্যান্ড অ্যালোন অর্থাৎ যেখানে একটি মাত্র দোকান রয়েছে, সেগুলি খোলা যাবে। তার মধ্যে রয়েছে হার্ডওয়ার, লন্ড্রি, মোবাইল ও মোবাইল সারাইয়ের দোকান, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর দোকান, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল, বইয়ের দোকান, স্টেশনারি, পেইন্ট ও রঙের দোকান, ইলেক্ট্রিক সামগ্রীর দোকান, টায়ার-টিউবের দোকান, ব্যাটারি, গাড়ি রিপেয়ারিং ও খুচরো যন্ত্রাংশের দোকান। খোলা যাবে বেসরকারি অফিসও। তবে সে ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ কর্মীকে অফিসে এনে কাজ করানো যাবে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
এ ছাড়া চা ও পানের দোকান খোলা যাবে। তবে দোকানে খাওয়ার জন্য নয়, বাড়িতে বা অফিসে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সকাল দশটা থেকে সন্ধে ছ’টা পর্যন্ত এই দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। তবে কন্টেনমেন্ট জোন এলাকায় কোনও কিছুতেই ছাড় নেই। মুখ্যসচিব এ দিন জানান, এর বাইরেও শপিং মল বা মার্কেট কমপ্লেক্সের ভিতরে অনেক অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকান রয়েছে, সেগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া যায় কি না, তা প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা করে পরে জানানো হবে। এ ছাড়া খনি ও শিল্পাঞ্চলে কাজকর্ম শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিব এ দিন বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় অনেক কিছু খোলার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যে ভাবে খোলা হচ্ছে, তাতে ভয় হচ্ছে। লকডাউন লঘু হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সহমর্মিতা রয়েছে। মানুষ যাতে বেঁচে থাকে। তাই অনেক বাধ্যবাধকতার মধ্যে আমাদের অনুমোদন দিতে হচ্ছে।’’
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
যে সব এলাকায় ব্যাপক ভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেগুলিকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করে কার্যত সিল করে দেওয়া হয়েছে ওই এলাকা। কিন্তু রাজ্যে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কন্টেনমেন্ট জোন এলাকাও। সোমবার বিকেলে দেওয়া রাজ্য সরকারের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কন্টেনমেন্ট জোন এলাকা রয়েছে কলকাতায়। তার পরেই উত্তর চব্বিশ পরগনা ও হাওড়া।
আরও পড়ুন: রাজ্যে মৃত্যু বেড়ে ৬১, এ পর্যন্ত আক্রান্ত ১২৫৯, জানাল নবান্ন
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক-নার্স, আতঙ্কে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হচ্ছে পিয়ারলেস হাসপাতাল
এর পাশাপাশি একসঙ্গে সাত জনের বেশি কোথাও জমায়েত করা যাবে না বলে এ দিনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। ধর্মীয়, সামাজিক বা রাজনৈতিক জমায়েতের ক্ষেত্রেও একই ভাবে ৭ জন জমায়েত হওয়া যাবে। তবে তার জন্য অনুমতি নিতে হবে এবং অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, রেশন দোকানের মতো জায়গাতেও একসঙ্গে ৭ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)