Nabanna

ঋণই ভরসা নবান্নের, লকডাউনে আয় ৯৭৫ কোটি

সম্ভবত এই প্রথম বকেয়া ধারের সুদ শোধ করতে পারেনি অর্থ দফতর। এই প্রথম ‘নেগেটিভ ব্যালান্স’-এ চলে গিয়েছে রাজ্যের মূলধনী ব্যয়।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০৪:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

লকডাউনের এপ্রিলে সরকার সচল রাখাই ছিল নবান্নের চ্যালেঞ্জ।

Advertisement

অর্থ দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিলে সরকারের ঘরে রাজস্ব জমা হয়েছিল মাত্র ৯৭৫ কোটি টাকা। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে ঘরে আসার কথা প্রতি মাসে গড়ে অন্তত সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা। মেলেনি কেন্দ্রীয় করের প্রাপ্য এক টাকাও। দিল্লির সরকারের অনুদান বাবদ জুটেছিল মাত্র ৮৮ লক্ষ টাকা। অথচ করোনার জন্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ার খরচের তালিকা দীর্ঘ! সামাল দিতে প্রথম মাসেই ১০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ধার নিতে বাধ্য হয়েছে নবান্ন। আর সম্ভবত এই প্রথম বকেয়া ধারের সুদ শোধ করতে পারেনি অর্থ দফতর। এই প্রথম ‘নেগেটিভ ব্যালান্স’-এ চলে গিয়েছে রাজ্যের মূলধনী ব্যয়।

লকডাউনে রাজ্যেও সে সময় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ। ই-ব্যবসা, অনলাইন কারবার, পরিষেবা ক্ষেত্র, হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি এবং কিছু সংস্থার পুরনো কারবারের ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’ এবং ‘অ্যাডভ্যান্স’ বাবদ জিএসটি খাতে এপ্রিলে জমা পড়ে মাত্র ২৩৭ কোটি টাকা। এই খাতেই সরকারের গড়ে প্রতি মাসে তিন হাজার কোটি টাকা রোজগার হয়। জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশন এবং স্ট্যাম্প ডিউটি থেকে সরকার এপ্রিলে পেয়েছে মাত্র ৭.৭৬ কোটি টাকা। স্বাভাবিক সময়ে ৫০০ কোটির বেশি রোজগার হয় জমি-বাড়ির ক্রয়-বিক্রয়ের পঞ্জিকরণ থেকে। পেট্রল-ডিজেলের উপর সেস থেকে সরকার প্রতি মাসে ৬০০ কোটি টাকা আয় করে থাকে। এপ্রিল মাসে সেই খাতে জমা পড়ে মাত্র সাড়ে ৪২ কোটি টাকা। অর্থ কর্তারা জানাচ্ছেন, মূলত সরকারি গাড়ির পেট্রল-ডিজেল থেকেই এই টাকা কর বাবদ জমা পড়েছে। কারণ, এপ্রিলে সরকারি গাড়ি আর জরুরি পরিষেবা ছাড়া আর কোনও গাড়ি চলেনি। জমির খাজনা থেকে সরকার পেয়েছে ১৬৪ কোটি টাকা। স্বাভাবিক সময়ে জমির খাজনা বাবদ ২৫০ কোটি টাকা আদায় হয়। এখন কৃষকদের জমির খাজনা মকুব করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বালি-পাথরের খাদান, ইটভাটার মাটি বা কোনও বড় প্রকল্পের জমির খাজনা বাবদ যেটুকু পাওয়া যায়। এপ্রিলেও ১৬৪ টাকা আদায় হওয়ায় অনেকের প্রশ্ন, তা হলে কি লকডাউনের সময়েও বালি-পাথরের খাদান চালু ছিল?

Advertisement

তবে লকডাউনের মাঝেও আবগারি রাজস্ব বাবদ সেই মাসেও ২৫১ কোটি টাকা সরকারের ঘরে জমা পড়েছে। কর্তারা জানাচ্ছেন, এপ্রিল মাসে মদ উৎপাদক ও বিক্রেতাদের লাইসেন্স নবীকরণের সময় ছিল। ফলে তাঁরা লাইসেন্স ফি জমা করেছিলেন। তা ছাড়া, মে মাসের গোড়াতে মদের দোকান খুলতে পারে এমন আভাস ছিল, ফলে অনেকে অগ্রিম মদ বুকিং করে থাকতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement