কামান দাগা: জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে কলকাতা পুরসভার কার্যালয়। ছবি: রণজিৎ নন্দী
সর্বোচ্চ আক্রান্তের ধারা অব্যাহত রেখে একদিনে মৃত্যুতেও রবিবার রেকর্ড তৈরি হল বঙ্গে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর কর্তৃক প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন আর জি করের রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান অভিজিৎ বসু (৭০) এবং এসএসকেএমের ফিজিক্যাল মেডিসিনের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অম্বর বল্লভ (৭১)। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পরে জুনের ৩০ তারিখ থেকে পঞ্চসায়রের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিজিৎবাবু। প্রায় এক সপ্তাহ ভেন্টিলেশনে রেখে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। এদিন সকালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, কোভিডের পাশাপাশি তাঁর সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজ়িজ়), উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবিটিসের সমস্যা ছিল। কোভিড আক্রান্ত আরেক প্রবীণ চিকিৎসক অম্বরবাবু সল্টলেকের এক বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার রাত পর্যন্ত সাধারণ শয্যায় ছিলেন তিনি। অক্সিজেনেও দিতে হচ্ছিল না। রবিবার আচমকা শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সকালে রোগীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
এ দিন সারা রাজ্যের পাশাপাশি কলকাতায় কোভিড পজ়িটিভ রোগীর মৃত্যুর (১৫) পরিসংখ্যানও এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। আক্রান্তের মাপকাঠিতে কলকাতা (৬৬২) এবং উত্তর ২৪ পরগনার (৫৪৪) পাশাপাশি হাওড়া (১৯১) এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার (১৫২) পরিসংখ্যান উল্লেখযোগ্য। বস্তুত, উত্তর ২৪ পরগনায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী গতি নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতরও। কলকাতা সংলগ্ন এই জেলায় দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম, দমদম, বরাহনগর এবং বিধাননগর পুরনিগমের অন্তর্গত সল্টলেক, কৈখালি, বাগুইআটির পরিস্থিতির উপরে বিশেষ নজর রয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। বারাসত এবং মধ্যমগ্রামেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে বলে খবর।
কলকাতা পুরসভার সবক’টি বরোতেই সংক্রমণের প্রভাব রয়েছে বলে খবর। পুরসভা সূত্রের খবর, এরই মধ্যে পুরসভার একাধিক চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক কর্মী, ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর, বরো পাঁচের সুপারভাইজার, চার নম্বর বরোর একজন চিকিৎসক-সহ তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য ভবনে সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান কার্যালয়ের এক পদস্থ কর্তা, চিকিৎসক কর্তা-সহ অন্তত দু’জন কর্মীর নতুন করে আক্রান্তের খবর মিলেছে। মিন্টো পার্কের বেসরকারি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের এক প্রবীণ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।