প্রতীকী ছবি।
ঠিক যে-কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মতো পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে, সেই অতিমারির রক্তচক্ষু এড়াতে শহরাঞ্চলের সরকারি স্কুলগুলিতে একাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে হলেই সুবিধা হবে বলে মনে করছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। যদিও শিক্ষকদের বক্তব্য, প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলির জন্য দরকার বিকল্প অফলাইন ব্যবস্থারও।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ঘোষণা অনুযায়ী, মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতিতে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করা হবে। সাধারণত তার পরের দিন থেকেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার কথা। এ বছর অফলাইন না অনলাইন, কোন পন্থায় ভর্তি হবে, সেই বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি পর্ষদ। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে একাদশে ভর্তির ফর্ম পূরণ অনলাইনেই করা উচিত বলে শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিমত। তাদের বক্তব্য, লোকাল ট্রেন চালু হয়নি, অন্যান্য গণপরিবহণও তুলনায় কম। ফলে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে গিয়ে ফর্ম পূরণ করতে সমস্যা হবে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ বিষয়ে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে চিঠি লিখেছে। ওই সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘স্কুলগুলিকে জেলাভিত্তিক কিছু জ়োনে ভাগ করা যেতে পারে। একটি জ়োনের একাধিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অনলাইনে একটি ফর্ম পূরণ করেই পছন্দের বিদ্যালয়গুলি বেছে নেওয়া সম্ভব। এতে বার বার বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে আর ফর্ম পূরণ করতে হবে না।”
সৌগরবাবুর মতে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যে ৩৫টি সম্পূর্ণ সরকারি স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ রয়েছে, সেগুলি জেলা সদরে অবস্থিত। সেখানে ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা নেই। তাই অনলাইনে ভর্তি হলে সমস্যা হবে না। তবে সরকার পোষিত বা সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের সংখ্যা অনেক বেশি এবং অসংখ্য স্কুল গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত। সেই স্কুলগুলিকে সম্পূর্ণ অনলাইন প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা যে কঠিন, তা মেনে নিচ্ছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকারও বলেন, “জেলা সদরের সরকারি স্কুলগুলিতে অনলাইনে ভর্তি সম্ভব। সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত কিছু বড় স্কুলও এই ব্যবস্থা করতে পারে। তবে প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলির জন্য অনলাইন আর অফলাইন দু’রকম পদ্ধতিই রাখা দরকার।” নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইনের বক্তব্য, যে-হেতু এ বার বিকল্প পদ্ধতিতে মাধ্যমিকের মূল্যায়ন হয়েছে, তাই কিছু স্কুল ভর্তির জন্য পরীক্ষাও নিতে পারে। পরীক্ষা এবং ফর্ম পূরণের পুরো ব্যবস্থা অনলাইনে করা হলে খুবই ভাল হয়।