গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
প্রতি দিন যত জন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন, তার থেকে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেশি ছিল এত দিন। কিন্তু গত সোমবার এ রাজ্যে সেই ছবিটা প্রথম বদলাতে দেখা যায়। সেই থেকে আজ, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা ৪ দিন ধরে রোজই নতুন করে সংক্রমিত হওয়াকে ছাপিয়ে যাচ্ছে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা। এ দিন নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ হাজারেরও কম। অথচ সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজারেরও বেশি। করোনার বাড়বৃদ্ধির গতিতে কিছুটা লাগাম লাগায় আশার আলো দেখছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৯৯৭ জন। অথচ এ দিন সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজার ১৮৯ জন। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৭৭২। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ১ লক্ষ ২১ হাজার ৪৬ জন। এখন সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ২৬ হাজার ৭০৯ জন যা গতকালের থেকে ২৪৫ কম।
স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। এই নিয়ে রাজ্যে মোট মৃত্যু হল ৩ হাজার ১৭ জনের। মৃতদের মধ্যে ১৬ জন কলকাতার বাসিন্দা। কলকাতায় মোট মৃত্যু হল ১ হাজার ২৩৮ জনের। এ ছাড়া ১০ জন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। ওই জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৯৭। এ ছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২, হুগলিতে ৭, হাওড়ায় ৫, পূর্ব মেদিনীপুরে ২, বাঁকুড়ায় ২, নদিয়ায় ২, দার্জিলিঙে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ হাজার নতুন সংক্রমণ, মোট মৃত্যু ৬০ হাজার ছাড়াল
এ দিন কলকাতায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৭১ জন। মহানগরীতে মোট করোনা রোগী ৩৮ হাজার ৩৮৮। উত্তর ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭৩ জন। ওই জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ৭৯০ জন। ওই দুই জেলাতেই করোনার ক্ষত সবচেয়ে গভীর। এ ছাড়া এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৩৬, হুগলিতে ১৩৪, হাওড়ায় ১৫৮, পশ্চিম বর্ধমানে ৭০, পূর্ব বর্ধমানে ৫৫, পূর্ব মেদিনীপুরে ২০২, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১১২, বাঁকুড়ায় ৪৬, পুরুলিয়ায় ৬০, বীরভূমে ১৩৭, নদিয়ায় ৬০ এবং মুর্শিদাবাদে ৬৩ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে ৮৩, কোচবিহারে ১০২, দার্জিলিঙে ৯৫, জলপাইগুড়িতে ১০২, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৬৯ এবং মালদহে ৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এ দিন।
রাজ্যে সুস্থতার হার বেশ আশাপ্রদ। সোমবার থেকে টানা ৪ দিন ধরেই নতুন সংক্রমিতের সংখ্যাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে এক দিনে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা। বুধবার রাজ্যে সুস্থতার হার ছিল ৭৯.১০। এ দিন তা আরও খানিকটা বেড়ে হয়েছে ৮০.২৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ‘১৯৬২-র পর সবচেয়ে উদ্বেগজনক’, লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য জয়শঙ্করের
প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক ৪২ হাজার ৪৭৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ৯ দিন ধরেই ধারাবাহিক ভাবে নামছে এ রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার। বুধবার রাজ্যে সংক্রমণের হার ছিল ৭.৪৩ শতাংশ। এ দিন রাজ্যে সুস্থতার হার হয়েছে ৭.০৬ শতাংশ, যা গত দেড় মাসের মধ্যে রেকর্ড। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৭ লক্ষ ১৬ হাজার ৬০৭ জনের।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)