গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
নমুনা পরীক্ষা কমেছে প্রায় ১,৮০০। অথচ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করোনা সংক্রমিত হলেন বুধবারের তুলনায় বেশি। ফলে মৃত্যুর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের প্রবণতাতেও নতুন করে উদ্বেগে স্বাস্থ্য প্রশাসন। বৃদ্ধি পেয়েছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হারও। তবে সব কিছুর মধ্যে একটাই স্বস্তি— টানা বেড়ে চলেছে সুস্থতার হার।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ১৯৬ জন। বুধবার এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ১৮৯। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৬৯। রাজ্যের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনায় (৬৩২)। কলকাতায় এই সংখ্যা ৬০৭।
বুধবারের চেয়ে গত ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যানে নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা মাত্র ৭ জন বেশি। কিন্তু উদ্বেগ অন্য জায়গায়। বুধবারের বুলেটিনে ২৪ ঘণ্টায় টেস্টের সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজার ২২৯। বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ৪৩ হাজার ৪৩২। অর্থাৎ টেস্টের সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৭৯৭। অথচ নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা বেশি। স্বাভাবিক ভাবেই বেড়েছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। বেশ কিছু দিন ধরে সংক্রমণ কমতে কমতে ৭ শতাংশেরও নীচে নেমে গিয়েছিল গত রবিবার (৬.৯৬)। তার পর থেকে কম-বেশি হয়েছে। বৃহস্পতিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, এই হার পৌঁছে গিয়েছে ৭.৩৬ শতাংশে।
আরও পড়ুন: অনেক রাঘববোয়ালই গরু পাচারের মুনাফা পেয়েছেন, ইঙ্গিত সিবিআইয়ের
মৃত্যুর সংখ্যাতেও স্বস্তি নেই। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের। সোমবার ও মঙ্গলবার পর পর দু’দিন ২৪ ঘণ্টায় ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ১ কম ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে ফের সর্বোচ্চ মৃত্যু। এই নিয়ে রাজ্যে মোট কোভিডের বলি হলেন ৪ হাজার ৬০৬ জন। ২৪ ঘণ্টার হিসেবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়, ২০ জন। কলকাতায় মৃত ১৪।
কোভিড যুদ্ধে রাজ্য প্রশাসন যদি কোথাও স্বস্তির রেখা দেখতে পান, সেটা একমাত্র সুস্থতার হারে। টানা বেড়েই চলেছে এই হার। বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে এই সুস্থতার হার ৮৭.৪৬ শতাংশ। বুধবার এই সুস্থতার হার ৮৭.৩৭ শতাংশ। মঙ্গলবার ৮৭.২৮ শতাংশ এবং সোমবার ছিল ৮৬.১৬ শতাংশ। বৃহস্পতিবার চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩ হাজার ১৪ জন কোভিড আক্রান্ত রোগী। এই নিয়ে রাজ্যে মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লক্ষ ৮ হাজার ৪২ জন। রাজ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ২২১।
আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থ গায়ক এস পি বালসুব্রহ্মণ্যম
বেশ কিছু দিন ধরেই রাজ্যে করোনা সংক্রমণের প্রবণতা: ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যায় কখনও উত্তর ২৪ পরগনা শীর্ষে, কখনও মহানগরী কলকাতা। এই দুই জেলা বাদে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০০ বা তার বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন, এমন জেলাগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন। এগুলির মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২১৮), হাওড়া (১৮২), হুগলি (১৩৭), পশ্চিম মেদিনীপুর (১২৭), নদিয়া (১০৭), মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং-এর মতো জেলা। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় বাঁকুড়া ও পূর্ব মেদিনীপুরে ৯৯, কোচবিহারে ৯৮, পুরুলিয়ায় ৯৬ এবং আলিপুরদুয়ারে ৯৫ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এই জেলাগুলি নিয়েও ধীরে ধীরে দুশ্চিন্তা বাড়ছে রাজ্য সরকারের।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)