সতর্ক করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা
Corona

করোনা রুখতে উৎসবে মানতেই হবে স্বাস্থ্যবিধি

আনলক-পর্বে, বিশেষত সেপ্টেম্বরে মাস্ক ব্যবহার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের চাপ কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে। দোকান-বাজারের চেহারা থেকেই এই বাঁধনছাড়া অবস্থা পরিষ্কার। অনেকেই রাস্তাঘাটে মাস্ক পরার প্রয়োজন মনে করছেন না। কেউ দেখার নেই।

Advertisement

প্রকাশ পাল

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০২:০১
Share:

বাজারচলতি যে কোনও মাস্ক ব্যবহারের আগে সতর্ক থাকুন। ছবি: এএফপি

মাস্ক পরার প্রবণতা কমছে। সব জায়গায় দূরত্ববিধিও সে ভাবে মানা হচ্ছে না। হুগলিতে করোনা পরিস্থিতি এখনও নাগালেই রয়েছে বলে প্রশাসনের আধিকারিকরা মনে করছেন। কিন্তু যে ভাবে সচেতনতা কমছে, তাতে তাঁদের চিন্তা বাড়ছে। পুজোর মরসুমে মানুষকে চূড়ান্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো-সহ অন্যান্য উৎসবের সময়ে অত্যন্ত সতর্কতা জরুরি। উৎসবের আনন্দে মাস্ক ব্যবহার, শারীরিক দূরত্ববিধি ভুলে গেলে চলবে না।’’ তিনি সতর্ক করে দিচ্ছেন,

‘‘কেরলে ওনাম উৎসবে সাধারণ মানুষ সতর্কতা অবলম্বন না করায় ওখানে সংক্রমণ অত্যন্ত বেড়েছে। এ থেকে আমাদেরও শিক্ষা নিতে হবে। না হলে পরিণাম খুব খারাপ হতে পারে।’’

Advertisement

জেলায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার। জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, সুস্থতার হার ভালই। প্রায় ১২ হাজার মানুষ সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন। রবিবার পর্যন্ত অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১১৮৬। অধিকাংশই উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত। বাড়িতেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে। এ দিন পর্যন্ত হুগলিতে করোনায় ২৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিতের নিরিখে মৃত্যুহার বেশি নয় বলেই স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি।

পরিসংখ্যান বলছে, সেপ্টেম্বর মাসে হুগলিতে মোট ৫০৩৯ জন (গড়ে দৈনিক ১৬৭.৯৬ জন) সংক্রমিত হয়েছেন। অগস্টে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ হাজার। অর্থাৎ, সেপ্টেম্বরে সংক্রমণ বেড়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আনলক-পর্বে বিধিনিষেধ শিথিল হয়েছে। মানুষ বাইরে বেরোচ্ছেন। বিনোদন পার্ক, সিনেমা হলও খুলেছে। স্বাভাবিক কারণেই সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। তবে উদ্বেগের কিছু হয়নি।’’

সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনের তুলনায় পরের ১৫ দিনে সংক্রমণের হার অবশ্য কম। প্রথম ১৫ দিন সংক্রমিত হয়েছিলেন ২৭৮০ জন (দৈনিক গড় ১৮৫.৩৩ জন)। পরের ১৫ দিনে ২২৫৯ জন (দৈনিক গড় ১৫০.৬ জন)। ১৫ সেপ্টেম্বর অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ১৪৩৩ জন। ৩০ সেপ্টেম্বর তা ১১৭৪ জনে নেমে দাঁড়ায়। তবে, এটুকু স্বস্তি সত্বেও জন-সচেতনতা নিয়ে চিকিৎসকদের উদ্বেগ কমছে না।

আনলক-পর্বে, বিশেষত সেপ্টেম্বরে মাস্ক ব্যবহার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের চাপ কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে। দোকান-বাজারের চেহারা থেকেই এই বাঁধনছাড়া অবস্থা পরিষ্কার। অনেকেই রাস্তাঘাটে মাস্ক পরার প্রয়োজন মনে করছেন না। কেউ দেখার নেই।

তা ছাড়া, ট্রেনের বিকল্প হিসেবে সড়ক পথে গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা মসৃণ করতে পারেনি প্রশাসন। ফলে, বাসে উপচে পড়ছে ভিড়। আসনপিছু যাত্রীর সরকারি নির্দেশিকা রয়ে গিয়েছে নামেই। বাসযাত্রীদের মাস্ক পরারও বালাই নেই।

জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের অবশ্য দাবি, মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চলছে। পরিস্থিতির দিকে তাঁরা নজর রাখছেন। সংক্রমণের সংখ্যার বিশেষ হেরফের হলে সেই মতো পরিকল্পনা করে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement