প্রতীকী ছবি।
চার জেলায় বদল হয়েছে নোডাল অফিসার। বদল হয়নি পরিস্থিতির। সংক্রমণ সূচকের গতি ক্রমবর্ধমান।
কোভিড-১৯’র নিয়ন্ত্রণ এবং তা মোকাবিলায় নজরদারি রাখার জন্য গত সোমবার চার সিনিয়র আইএএসকে নোডাল অফিসার হিসাবে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। গত ১৩ জুলাই এই দায়িত্ব বণ্টনের কথা জানায় তারা। চার জন আইএএস অফিসার হলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীন প্রকাশ, মনোজ পন্থ এবং রাজেশ পাণ্ডে। জেলাগুলির সঙ্গে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের সমন্বয় রাখার কাজও করছেন তাঁরা। সরকারের বিধিনিষেধ কার্যকরী হচ্ছে কি না, তা-ও প্রতিনিয়ত খতিয়ে দেখছেন নোডাল অফিসারেরা। দায়িত্ব নেওয়ার পরেই কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করতে শুরু করেছেন চার সিনিয়র আইএএস অফিসার। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা, রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। দুই পুলিশ কর্তা নীরজ সিংহ এবং প্রবীণ ত্রিপাঠী। রয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার রীনা মিত্রও। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য বুলেটিন অনুযায়ী, কলকাতায় সংক্রমিতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বুলেটিন অনুযায়ী, ৫ জুলাই শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪৪। ১০ জুলাই তা বেড়ে হয় ৩৭৪। আবার ১৩ জুলাই ৪১৮ জন সংক্রমিত হন। আর ২২ জুলাই তা ৬৯২ । পরের দিন, ২৩ জুলাই ৭৯৫ জন আক্রান্ত হন। কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনার সংক্রমণের গতি ক্রমেই চিন্তা বাড়ছে রাজ্য প্রশাসনের। ৫ জুলাই সেখানে ২১৪ জনের শরীরে নোভেল করোনাভাইরাসের সন্ধান মিলেছিল। পরের কয়েকদিনে সেখানের সংক্রমণ নিয়ে চিন্তা না বাড়লেও ১০ জুলাই ৩২৮ জন আক্রান্ত হন। পরবর্তীতে পরিস্থিতির বদল হয়। তবে তার মাঝে দু-একদিন উত্তর ২৪ পরগনায় সংক্রমণের গতি কিছুটা নিয়ন্ত্রিত ছিল। কিন্তু ২২ জুলাই ৬২৪ জন আক্রান্ত হন। আবার ২৩ জুলাই এক ধাক্কায় কিছুটা কমেছে। ওইদিন ৫৪৫ জন পজ়িটিভ হন।
তবে কলকাতা বা উত্তর ২৪ পরগনার থেকে অনেকটা ভাল অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। কিন্তু সেখানেও সংক্রমণের পরিসংখ্যান কখনও ঊর্ধ্বগামী । কখনও বা বেশ কিছুটা নিম্নগামী। ৫ জুলাই সেখানে ১১৮ জন সংক্রমিত হন, সেখানে ১০ জুলাই সেই সংখ্যা ছিল ১০৪ জন। ১৩ জুলাই তা আরও নেমে যায়। ওই দিন ৯৫ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণের হদিশ মেলে। তবে ২১ জুলাই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২০৭ জন করোনায় আক্রান্ত হন। ২৩ জুলাই কিছুটা কমে। ১৭৩ জনের শরীরের করোনাভাইরাসের সন্ধান মেলে। হাওড়াতে সংক্রমণের পরিসংখ্যান লেখচিত্র ওঠানামা করছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুসারে, ৬ জুলাই ৯৭ জন আক্রান্ত হন। ১২ জুলাই তা অল্প বেড়ে ১২৭ হয়। ১৭ জুলাই ১৮২ জন আক্রান্ত হন। আর আটচল্লিশ ঘণ্টা পরে তা কিছুটা বেড়ে দু’শোর গণ্ডি ছাড়িয়ে যায়। আর ২৩ জুলাই তিনশো ছাড়িয়ে যায় আক্রান্তের সংখ্যা।
প্রশাসনের শীর্ষমহলের দাবি, অফিসাররা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারেন। তা করছেনও।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)