প্রতীকী ছবি।
কোভিডে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় ‘কনভালসেন্ট প্লাজ়মা থেরাপি’র (সিপিটি) উপকারিতা প্রসঙ্গে নতুন দিকের সন্ধান দিল বঙ্গের গবেষণা। এ রাজ্যে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি (আইআইসিবি) এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ উদ্যোগে করোনায় প্লাজ়মা থেরাপি কতখানি সহায়ক তা নিয়ে গবেষণা চলছে। বৃহস্পতিবার জার্নালে ছাপার পূর্বে (প্রি-প্রিন্ট ভার্সন) ‘মেড আর্কাইভে’ প্রকাশিত রাজ্যের গবেষণাপত্রের বক্তব্য হল, করোনার মোকাবিলায় পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি সরবরাহের পাশাপাশি প্রদাহের ঝড়কে (সাইটোকাইন স্টর্ম) শান্ত করার ক্ষেত্রেও প্লাজ়মা থেরাপির ভূমিকা রয়েছে।
দু’সপ্তাহ আগে ‘মেড আর্কাইভে’ই প্রকাশিত আইসিএমআরের গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছিল, করোনা রোগীর মৃত্যু ঠেকানোর ক্ষেত্রে ‘কনভালসেন্ট প্লাজ়মা’ (সিপি) সহায়ক নয়। বঙ্গের গবেষণা শুধু সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার মধ্যে আটকে থাকেনি। কোভিডের গতিবিধি বুঝতে দেশের প্রথম ইমিউনোলজিক্যাল স্টাডি’র অন্য দিক প্রকাশ্যে আনলেন বঙ্গ গবেষকেরা।
এ দিন গবেষণার প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর তথা আইআইসিবি’র ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় জানান, করোনা রোগীর দেহের অভ্যন্তরে প্রদাহের জন্য সাধারণত ‘আইএল ৬’ নামের সাইটোকাইনকেই কাঠগড়ায় তোলা হয়। কিন্তু তাঁদের গবেষণা বলছে, ৪৮টি সাইটোকাইনের মধ্যে অন্তত ১৪টি সাইটোকাইন প্রদাহের জন্য দায়ী। তার মধ্যে চারটি সাইটোকাইনের (আইএল-৬, আইপি ১০, এমসিপি ৩ এবং এম আই পি ওয়ান আলফা) ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীপ্যমানবাবুর কথায়, ‘‘প্লাজ়মা দেওয়ার সঙ্গে অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে প্রদাহের মাত্রা কেন কমছে, তা গবেষণার পরবর্তী ধাপ। অ্যান্টিবডি দিয়ে ভাইরাসের মোকাবিলার পাশাপাশি প্লাজ়মা যে প্রদাহের ঝড়কে শান্ত করতে পারে তা আমরাও ভাবিনি।’’
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগিরাজ রায় বলেন, ‘‘আমরা বলছি, প্লাজ়মা দেওয়া মানে শুধু অ্যান্টিবডি থেরাপি নয়। তার সঙ্গে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত। কিছু সাইটোকাইনের দাপট কমানোর ক্ষেত্রেও যে প্লাজ়মা সহায়ক, সেটি আমাদের গবেষণার নতুন দিক।’