গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
সংক্রমণ বাড়ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সুস্থতার হারও। গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিতে একই ছবি বহাল রয়েছে। শনিবার অবশ্য ছবিটা আরও একটু বদলেছে, যা স্বস্তিদায়ক বলেই মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন সংক্রমণের হার গত এক মাসে সবচেয়ে কম। গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫০ থেকে ৫৫-র মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। এ দিন তা আরও কিছুটা নেমেছে।
আজ সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৩ হাজার ২৩২ জনের। শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ২৪৫। এই নিয়ে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫৯৬।
গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাটা ৫০ থেকে ৫৫-র মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। শুক্রবারই রাজ্যে গত ৫৫ জনের মত্যু হয়েছে। এ দিন অবশ্য সেই সংখ্যাটা কমে হয়েছে ৪৮। এই নিয়ে রাজ্যে মোট ২ হাজার ৭৩৭ জনের মৃত্যু হল। এর মধ্যে কলকাতায় ১২, উত্তর ২৪ পরগনায় ৯, হাওড়াতে ৬, হুগলিতে ৫ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: সিদ্ধার্থকে জেরা সিবিআইয়ের, নতুন কী তথ্য দিলেন সুশান্তের প্রতিবেশী?
গোড়া থেকেই রাজ্যের মধ্যে কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলছিল। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫১৬ জন। শুক্রবার আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪৬২ জন। এই নিয়ে মহানগরীতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৬৯৪।
সংক্রমণের নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫৪৭ জন। সব মিলিয়ে ওই জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার ৬১৯। এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২০৯, হুগলিতে ১৮৫, হাওড়ায় ১৫৩, পশ্চিম বর্ধমানে ৮৮, পূর্ব বর্ধমানে ৮৫, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬৬, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৬৫, বাঁকু়ড়ায় ৯৭, পুরুলিয়ায় ৪৭, বীরভূমে ৩৮, নদিয়ায় ৯৬ এবং মুর্শিদাবাদে ১৪০ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত ধরা পড়েছে।
উত্তরবঙ্গেও সংক্রমণের ছবিটা এমন— আলিপুরদুয়ারে ৫৬, কোচবিহারে ৯১, দার্জিলিঙে ১০৪, জলপাইগুড়িতে ৫০, উত্তর দিনাজপুরে ৫২, দক্ষিণ দিনাজপুরে ১০৮ ও মালদহে ১১০ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। দার্জিলিঙে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আশার আলো জাগাচ্ছে সুস্থতার হার। শুক্রবার রাজ্যে সুস্থতার হার ছিল ৭৬.৯৬ শতাংশ। এ দিন তা আরও কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৭৭.৪১ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৯৫৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ দিনই ছাড়া পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮ জন। রাজ্যে এখন সক্রিয় করোনা রোগী ২৭ হাজার ৯০০ জন।
উদ্বেগের মাত্রা কমছে সংক্রমণের হারেও। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। বেশ কিছু দিন ধরেই এই সংক্রমণের হার নীচে নামছিল। শুক্রবার সেই হার নেমে হয় ৮.৯৬ শতাংশ। শনিবার তা আরও খানিকটা নেমে হয়েছে ৮.৯০ শতাংশ।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)