গ্রাফিক: নিরুপম পাল।
রাজ্যের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একধাক্কায় সাড়ে ৬০০-র কাছাকাছি পৌঁছে গেল। জানুয়ারির পর এক দিনে এই প্রথম নতুন করে আক্রান্ত হলেন ৬৪৬ জন। কলকাতায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় আড়াইশোর কাছাকাছি পৌঁছল। অন্য দিকে, কলকাতার পরেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রায় দেড়শো জনের মধ্যে নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
শুক্রবার রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য জুড়ে যে ৬৪৬ জনের মধ্যে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, তার মধ্যে কলকাতার বাসিন্দা ২৩৯। ওই সময়ের মধ্যে আক্রান্তের নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় ১৫৩ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়া, হাওড়া (৫৬) এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৩৭) জেলাতেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ১৬ জানুয়ারির পর এই প্রথম দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে এক লাফে সাড়ে ৬০০-র দিকে কাছে পৌঁছল। ওই দিন রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬০৯ জন।
স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য়ে ৪ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ২ জন মারা গিয়েছেন। কলকাতা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ জন করে রোগীর মৃ্ত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার ৩২০ জন কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
এ রাজ্যে প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যা বাড়লেও দৈনিক টিকাকরণ আগের দিন তুলনায় অনেকটাই কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ লক্ষ ২২ হাজার ২২৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৩১ জনের টিকাকরণ হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত মোট ৪৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৩৭ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
দৈনিক টিকাকরণ কম হলেও এক দিনে কোভিড পরীক্ষার সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৩৪টি কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। তার মধ্যে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার আগের থেকে বেড়ে হয়েছে ২.৬৯ শতাংশ। প্রসঙ্গত, প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। বৃহস্পতিবার এই হার ছিল ২.২৪ শতাংশে।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৮৩ হাজার ২৭ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যদিও সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪৭৬ জন কোভিড রোগী। ফলে এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ২৩১ জন। তবে যে গতিতে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি সামলাতে যে আরও কড়াকড়ির প্রয়োজন, তা মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় ভুলবশত কয়েক দিন আগের করোনা চিত্রের গ্রাফিক কার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল। এই অনিচ্ছাকৃত এবং গুরুতর ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।)