ম্যাচের পর উল্লাস মোহনবাগান ফুটবলারদের। ছবি: সমাজমাধ্যম।
আরও এক বার ডার্বির রং সবুজ-মেরুন। আইএসএল ডার্বিতে ১-০ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছে মোহনবাগান। তাদের হয়ে একমাত্র গোল করেছেন জেমি ম্যাকলারেন। গুয়াহাটির মাঠে কেমন খেললেন দুই প্রধানের ফুটবলারেরা। রিপোর্ট কার্ড আনন্দবাজার অনলাইনে।
এই তালিকায় দুই দলের হয়ে শুরু করা মোট ২২ জন ফুটবলারের রিপোর্ট কার্ড রয়েছে। পরিবর্ত হিসাবে যাঁরা নেমেছিলেন তাঁদের তালিকায় রাখা হয়নি।
মোহনবাগান:
১) বিশাল কাইথ (৮)— দলের গোলরক্ষক। ম্যাচে একটিও গোল খাননি তিনি। কয়েক বার আক্রমণ করেছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু বিশালের বিশ্বস্ত হাতে সব প্রতিহত হয়েছে। সেই কারণেই সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছেন তিনি।
২) টম অলড্রেড (৭)— দলের ডিফেন্ডার। ভাল ডিফেন্স করেছেন তিনি। বিশেষ করে একটি ক্ষেত্রে ক্লেটন সিলভার অবধারিত গোল বাঁচিয়েছেন তিনি।
৩) আলবের্তো রদ্রিগেস (৭)— এই ডিফেন্ডারও ভাল খেলেছেন। তাঁর সঙ্গে অলড্রেডের জুটি ভাল দেখাচ্ছে। তাঁদের টপকে গোল করতে পারেননি লাল-হলুদ ফুটবলারেরা।
৪) শুভাশিস বসু (৭)— দলের অধিনায়ক। দায়িত্ব নিয়ে খেলেছেন। রক্ষণে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। কয়েকটি ক্ষেত্রে মরিয়া ডিফেন্স করেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত জিতিয়েছেন দলকে।
৫) আশিস রাই (৭)— রক্ষণের পাশাপাশি আক্রমণেও ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। আশিসের পাস থেকেই হয়েছে মোহনবাগানের একমাত্র গোল।
৬) সাহাল আব্দুল সামাদ (৭)— মাঝমাঠে দায়িত্ব নিয়ে খেলেছেন। রক্ষণ ও আক্রমণ দু’টি ক্ষেত্রেই নজর কেড়েছেন। সবচেয়ে বেশি দৌড়েছেন তিনি। তবে পুরো ৯০ মিনিট তাঁকে রাখতে পারেননি কোচ হোসে মোলিনা।
৭) আপুইয়া (৬)— মাঝমাঠে ভাল খেললেও কিছু ক্ষেত্রে ভুল করেছেন আপুইয়া। সেরা ফর্মে দেখা যায়নি তাঁকে। আপুইয়া আরও ভাল খেললে আরও দাপট দেখাতে পারত বাগান।
৮) লিস্টন কোলাসো (৫)— তিনি যে মানের ফুটবলার তা ডার্বিতে দেখা যায়নি। বেশ কিছু ভাল বল পেয়েছিলেন এই ফুটবলার। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি। তিনি ভাল খেললে মোহনবাগানের গোলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত।
৯) মনবীর সিংহ (৫)— মনবীরকেও এই ম্যাচে একটু নিষ্প্রভ দেখিয়েছে। তাঁকে আটকে রেখেছিলেন বিষ্ণু। লিস্টন ও মনবীর ভাল খেললে বাগানের জয়ের ব্যবধান আরও বাড়তে পারত।
১০) জেমি ম্যাকলারেন (৭)— ম্যাচের একমাত্র গোল তিনিই করেছেন। আরও গোল করতে পারতেন। সুযোগ নষ্ট করেছেন। তাঁকে পুরো ৯০ মিনিট খেলানো যায়নি।
১১) জেসন কামিংস (৫)— গোটা ম্যাচে তেমন নজরে পড়েননি। গতি কম হওয়ায় অনেক সুযোগ নষ্ট করেছেন। ম্যাকলারেনকে আরও সঙ্গ দিতে পারলে বাগানের জয়ের ব্যবধান বাড়তে পারত। তাঁকেও ৯০ মিনিট খেলানো যায়নি।
ইস্টবেঙ্গল:
১) প্রভসুখন গিল (৭)— দলের গোলরক্ষক। একটি গোল খাওয়া ছাড়া ম্যাচে কোনও ভুল করেননি। উল্টে বাগানের নিশ্চিত দু’টি গোল বাঁচিয়েছেন তিনি।
২) হিজাজি মাহের (৩)— তাঁর ভুলেই গোল খেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। যত ক্ষণ খেলেছেন একের পর এক ভুল করেছেন। বাধ্য হয়ে তাঁকে তুলেন নেন কোচ অস্কার ব্রুজ়ো।
৩) হেক্টর ইয়ুস্তে (৫)— কিছু ক্ষেত্রে ভাল ডিফেন্ডিং করলেও অনেক জায়গায় ভুল করেছেন। তাতে আরও গোল খেয়ে যেতে পারত লাল-হলুদ।
৪) নিশু কুমার (৬)— যতটা পেরেছেন খেলেছেন। রক্ষণের পাশাপাশি আক্রমণেও উঠেছেন। নজর কেড়েছেন এই ফুটবলার।
৫) লালচুংনুঙ্গা (৬)— ইস্টবেঙ্গলের এই ডিফেন্ডারও খারাপ খেলেননি। তাঁর গতি কাজে লেগেছে। রক্ষণের পাশাপাশি আক্রমণেও উঠেছেন তিনি।
৬) শৌভিক চক্রবর্তী (৫)— ভালই খেলছিলেন। কিন্তু ৬৩ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখলেন। ফলে দল আরও চাপে পড়ে গেল। লোক না কমলে হয়তো ম্যাচে গোল করতে পারত ইস্টবেঙ্গল।
৭) জিকসন সিংহ (৬)— মাঝমাঠে ভাল খেলেছেন। কয়েকটি ক্ষেত্রে আক্রমণেও উঠেছেন। যে দায়িত্ব তাঁর ছিল তা পালন করেছেন জিকসন।
৮) ডেভিড লালানসাঙ্গা (৫)— এই ম্যাচে শুরু থেকে খেলছিলেন। কিন্তু সে ভাবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। শৌভিক লাল কার্ড দেখার পর ডেভিডকে তুলে নিতে বাধ্য হন কোচ।
৯) পিভি বিষ্ণু (৭)— লাল-হলুদ ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল খেলেছেন। রক্ষণ ও আক্রমণে সমান ভাবে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ভাগ্য ভাল থাকলে গোলও করতে পারতেন।
১০) ক্লেটন সিলভা (৬)— কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু গোল করতে পারেননি। তিনি আরও একটু ভাল খেলতে পারলে সুবিধা হত ইস্টবেঙ্গলের।
১১) দিমিত্রিয়স দিয়ামানকতাকোস (৫)— তাঁর প্রধান কাজ গোল করা। কিন্তু তেমন সুযোগ তৈরিই করতে পারেননি তিনি। বেশির ভাগ সময় একটু পিছন থেকে খেলতে দেখা গিয়েছে এই বিদেশিকে।