প্রতীকী ছবি।
দুর্গোৎসবে আমজনতা অতিমারির সুরক্ষা বিধি কতটা মেনে চলবে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে রাজ্য প্রশাসন। করোনা সংক্রমণ রুখতে লাগাতার সাবধানবাণী, সচেতনতা প্রচার সত্ত্বেও সরকারি কর্তাদের আশঙ্কা কাটছে না। তাই পুজোয় সংক্রমণের সম্ভাব্য ঢেউয়ের মোকাবিলায় রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কোভিড-শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখন রাজ্যে ১২,৭৫১ কোভিড-শয্যা ও কোভিড হাসপাতালগুলিতে ১২৪৩টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। মঙ্গলবারের সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা বাংলায় কোভিড-শয্যা বাড়তে চলেছে ২১৭৪টি। তার মধ্যে ১৯৩৯টি সাধারণ কোভিড-শয্যা এবং ৫৩৫টি আইসিইউয়ের সুবিধাযুক্ত। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ১০০টি সাধারণ কোভিড-শয্যা বাড়বে। বাড়তি শয্যা পাচ্ছে হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, মালদহ, বালুরঘাট, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারও। এমআর বাঙুর, এনআরএস-সহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধাযুক্ত শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পুজোর মরসুমেই শয্যা বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ওই সব শয্যায় পরিষেবা মিলবে বিনামূল্যে। এ ছাড়াও বেসরকারি স্তরে কোভিড-শয্যা বাড়ছে কয়েকশো।
সোমবার সব জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকে কোভিড ব্যবস্থাপনার উপরে বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছিল। সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পরিষেবা যাতে কোনও ভাবে ব্যাহত না-হয়, তা নিশ্চিত করতে সব জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলা হয়েছে, শয্যার অভাবে কোনও রোগীকে যেন হয়রান হতে না-হয়। চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য চেয়ে কেউ প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে সর্বাগ্রে তাঁকে সহযোগিতা করতে হবে। সেই বৈঠকের দিনেই প্রশাসনিক স্তরে শয্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এক প্রকার চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞ শিবিরের একাংশের বক্তব্য, এমনিতেই সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে সরকারের। তাই সুরক্ষা বিধি কঠোর ভাবে পালন করার জন্য প্রশাসনের সর্বস্তর থেকে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। আলাদা ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনকেও।
স্থির হয়েছে, রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ এবং কলকাতা পুরসভা মিলিয়ে পুজোর সময় ২০ লক্ষ মাস্ক বিতরণ করবে। কোভিড সচেতনতা প্রচার ছাড়াও সর্বত্র জীবাণুনাশের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। তবু উৎসবের মরসুমে বেপরোয়া জনতার উদ্দামতায় সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও সরকারি তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত মোট কোভিড-শয্যার ৩৭.৪৯% ভর্তি রয়েছে। কিন্তু উৎসবের মরসুমে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করলে শয্যার চাহিদাও বাড়তে পারে। তার মোকাবিলা করতেই প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে সরকার।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি, গ্রিন বিল্ডিং এবং সিবি টপ মিলিয়ে আরও দু’েশো শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)