এই সেই শংসাপত্র।
করোনার প্রতিষেধক নিলেই এত দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তা ও ছবি দেওয়া শংসাপত্র পাওয়া যেত ‘কো-উইন’ পোর্টাল থেকে। তার পাল্টা হিসেবে এ বার টিকা নিলে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর থেকেও শংসাপত্র দেওয়া হবে এবং তাতে থাকবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও বার্তা।
রাজ্য প্রশাসনের অন্দরমহলের বক্তব্য, দু’টি শংসাপত্রের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। এতে উপভোক্তাকে কোনও সমস্যায় পড়তে হবে না।
টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকবে কেন, বিরোধীরা সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রচারের মাধ্যম হিসেবে টিকা-শংসাপত্রকে ব্যবহার করার অভিযোগও তোলা হয়েছিল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। কিছু দিন আগে ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের জন্য টিকা যখন রাজ্য সরকারকেই কিনতে হবে, তখন সেই সার্টিফিকেটে মুখ্যমন্ত্রীদেরই ছবি থাকবে। পশ্চিমবঙ্গও চাহিদা মেটাতে টিকা কেনার পথ নিয়েছে। এ-পর্যন্ত এই খাতে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। বিস্তর প্রতিকূলতার মধ্যে রাজ্য সরকারও যে-ভাবে টিকা জোগাড়ের চেষ্টা চালাচ্ছে, তার প্রমাণ হিসেবে রাজ্যের নিজস্ব শংসাপত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখা হচ্ছে বলে প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন।
এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “চূড়ান্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রী সকলকে টিকা দেওয়ার উপরে জোর দিয়েছেন। রাজ্যের সেই পদক্ষেপ তো প্রশংসনীয়। কেন্দ্রের সঙ্গে এ ব্যাপারে রাজ্যের কোনও রেষারেষি নেই।” অনেক স্বাস্থ্যকর্তা মনে করছেন, বিপুল অর্থ খরচ করে টিকা কিনে তা যে ঠিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, রাজ্যের শংসাপত্রকে সেটা যাচাইয়ের একটা মাধ্যম হিসেবেও ধরা যেতে পারে। “এই পদ্ধতি অনেকটা ব্যালান্স শিটের মতো। প্রতিষেধক কেনার সংখ্যা এবং শংসাপত্রের সংখ্যা মেলালেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে,” বলেন এক কর্তা।
স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, টিকা নেওয়ার পরে কো-উইন পোর্টাল থেকে যেমন সঙ্গে সঙ্গে শংসাপত্র পাওয়া যায়, তেমনই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর টিকা গ্রহীতাকে একটি এসএমএস পাঠাবে। সেখানে থাকা লিঙ্ক থেকে রাজ্যের শংসাপত্র মিলবে। তবে দু’টি শংসাপত্রের মধ্যে কিছুটা ফারাক আছে। কেন্দ্রের শংসাপত্রে উপভোক্তা এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি ‘ইউনিক’ নম্বর দেওয়া থাকে। রাজ্যের শংসাপত্রে তা নেই। কেন্দ্রের শংসাপত্রে দ্বিতীয় ডোজ়ের তারিখের উল্লেখ থাকলেও রাজ্যের শংসাপত্রে তা রাখা হয়নি। কেন্দ্রের শংসাপত্রের মোদীর ছবি রয়েছে বাঁ দিকে। রাজ্যের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রয়েছে ডান দিকে। প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, ‘দাওয়াই ভি অর কড়াই ভি।’ মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘সজাগ থাকুন, নিরাপদে থাকুন।’