—ফাইল চিত্র।
দু’দিন বিরতির পরে ফের ঊর্ধ্বমুখী বঙ্গের সংক্রমণ সূচক। গত রবিবার চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা পজ়িটিভের সংখ্যা ছিল ১৫৬০। পরের দু’দিন সংক্রমণ খানিক কমে হয় যথাক্রমে ১৪৩৫ এবং ১৩৯০।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, বুধবার এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৮৯ জন। যা এ যাবৎ সর্বোচ্চ। এ দিন রাজ্যে করোনা পজ়িটিভ রোগীর মোট মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছুঁয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ২০ জন কোভিড পজ়িটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
আগামী কয়েক দিন যে সংক্রমণ বাড়বে সে কথা জানিয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সারা পৃথিবীতে চলা মহামারি, ম্যাজিক করে আমরা আটকে দিতে পারব না। সচেতনতাই সবচেয়ে বড় ম্যাজিক। এখনও ওষুধই আবিষ্কার হয়নি! কেন্দ্র কোনও সহযোগিতা করেনি। লক্ষ লক্ষ মানুষের সেফ হাউস বা কোয়রান্টিন সেন্টার, হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল নেওয়া, সব চেষ্টা হচ্ছে।’’ এর পরই তিনি বলেন, ‘‘ক’দিন সংক্রমণ বাড়বে। কারণ আমরা পরীক্ষা, ট্রেসিং বাড়াব।’’ মঙ্গলবারই বাংলায় নমুনা পরীক্ষার হার আশানুরূপ নয় বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হাজার ছুঁল, সংক্রমণের হার বেড়ে ১৪
এ দিন রাজ্যে আক্রান্ত ১৫৮৯ জনের মধ্যে কলকাতার ৪২৫ জন, উত্তর ২৪ পরগনার ৩৪৭, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৭৪, হাওড়ার ১৫১ জন। উত্তরবঙ্গে এ দিন আক্রান্ত হয়েছেন ২৬৪ জন। তার মধ্যে শুধু মালদহে ১২১ জন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দার্জিলিং (৬৪)।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
এ দিন আক্রান্তদের তালিকায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি, ইন্টার্ন-সহ ছ’জন চিকিৎসক রয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায়ের গাড়িচালকের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। যার প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষারও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে খবর। এ দিকে মেডিক্যালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে জটিলতার জেরে নমুনা পরীক্ষার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রোগীর পরিজনেরা।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
ব্যারাকপুরের বাসিন্দা শঙ্কর লায়েক নামে এক রোগীর স্বামী জানান, তাঁর স্ত্রী প্রথমে আরজিকরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অস্ত্রোপচারের আগে নমুনা পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। এর পর থেকে তিনি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু শঙ্করের করোনা পরীক্ষা না-হওয়ায় তাঁকে এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছেন না প্রতিবেশীরা। সে কথা জানতে পেরে শঙ্করের নমুনা পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যন্ত্র খারাপ থাকায় সেই পরীক্ষা এ দিন অন্তত করানো যায়নি বলে জানিয়েছেন শঙ্কর। যদিও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সূত্রের দাবি কিটের সমস্যার জন্য পরীক্ষার সংখ্যা কমানো হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু একেবারে বন্ধ হয়নি।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ