বাঙুর হাসপাতাল পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। —নিজস্ব চিত্র
রাজারহাটের পর এ বার এম আর বাঙুর কোভিড হাসপাতাল পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। পাশাপাশি হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও সন্দেহজনক রোগীদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তাঁরা। বাঙুর হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে কোভিড-১৯ পজিটিভ এবং শ্বাসকষ্ট, জ্বরের মতো করোনার উপসর্গ থাকা করোনা সন্দেহভাজনরা ভর্তি রয়েছেন এই হাসপাতালে। হাসপাতালে কত জন ভর্তি রয়েছেন, আইসিএমআর এবং রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের গাউডলাইন মেনে সেখানে সব কিছু হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা।
তিন দিনের টানাপড়েন শেষে অবশেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পরিদর্শন শুরু করলেন রাজ্যের করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে এ দিন সকালে রাজারহাট কোয়রান্টিন সেন্টার পরিদর্শন করলেন তাঁরা। বুধবার রাজ্যকে যে তালিকা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা, সেই তালিকা অনুযায়ী কলকাতা, হাওড়া ও পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন সংক্রমিত এলাকা ঘুরে দেখার কথা এই প্রতিনিধি দলের।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে রাজারহাট কোয়রান্টিন সেন্টার পরিদর্শনে যান এই প্রতিনিধিরা। পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট পরে সেখানে ঢোকেন তাঁরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ওই হাসপাতালে ছিলেন তাঁরা। সেখানে কোয়রান্টিনে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, সেই সব বিষয়ে জানতে চান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। এর পর রওনা দেন বাঙুর হাসপাতালের উদ্দেশে।
সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ রাজ্যে আসার পর থেকেই কেন্দ্র-রাজ্য সঙ্ঘাত শুরু হয়। রাজ্যের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রে চিঠি লিখে নালিশ জানান ওই দলের সদস্যরা। তার পর রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠিয়ে মহামারি আইন ও সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণের উল্লেখ করে প্রতিনিধিদের সাহায্যের আর্জি জানায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অবশেষে বুধবার বিকেলে জট খোলে। রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, সব রকম সাহায্য করা হবে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের।
আরও পড়ুন: রিপোর্টের ক্ষেত্রে আশা করি কেন্দ্রীয় দল নিরপেক্ষ হবে: মুখ্যসচিব
আরও পড়ুন: কিট দেওয়ার নাম নেই, বদনামের চক্রান্ত: মমতা
তার পরেই বুধবার বিকেলে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি পাঠান প্রতিনিধি দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র। ওই চিঠিতেই সবিস্তার উল্লেখ করা হয়, কোথায় কোথায় যেতে চান প্রতিনিধিরা। কোন কোন বিষয় খতিয়ে দেখতে চান তাঁরা, তারও তালিকা দেওয়া হয় ওই চিঠিতে। সেই মতোই আজ সকালে রাজারহাটের কোয়রান্টিন সেন্টার পরিদর্শন করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। তাঁদের সূত্রে খবর, কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতাল, কোয়রান্টিন সেন্টার, বাজার, সংক্রমিত এলাকা পরিদর্শনের পর হাওড়ায় যেতে পারেন তাঁরা। তার পর তালিকা অনুযায়ী অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের।