ছবি: পিটিআই।
করোনার বলি হল চাষিদের জমির স্বাস্থ্য পরীক্ষা!
কোভিড সংক্রমণের কারণে দেশে চাষিদের জমির স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ আপাতত স্থগিত করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক। ফলে ২০২০ সালে চাষিদের জমির মাটি পরীক্ষা করে সয়েল হেলথ কার্ড তৈরি হচ্ছে না। ২০১৫ সাল থেকে রাজ্যে প্রায় ৮২ লক্ষ এমন কার্ড তৈরি হয়েছে। সেই কার্ডে চাষির জমির মাটির গুণাগুণ লেখার পাশাপাশি কী ধরনের সার, কত পরিমাণ প্রয়োগ করতে হবে তা লিখে দেওয়া হত। এর ফলে চাষিরা সঠিক পরিমাণে সার প্রয়োগ করে অধিক ফসল ফলাতে পারতেন বলে কৃষি কর্তারা জানাচ্ছেন। গত ১৪ জানুয়ারি মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতেন এমন ১৩৩ জনের চাকরি চলে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে রয়েছে ১৩টি সরকারি মাটি পরীক্ষাগার। তাতে জমে রয়েছে প্রায় লাখ খানেক মাটির নমুনা। রাজ্য কী ভাবে ওই প্রকল্প চালাবে বা আদৌ চালাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় চরমে। কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য,‘‘কেন্দ্র প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে চুক্তিতে যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের চাকরি গিয়েছে। আমরা পরিস্থিতি কোনওক্রমে সামাল দিচ্ছি।’’
কেন এই পরিস্থিতি হল? কৃষি কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পর প্রতি ব্লকে একটি গ্রামের সমস্ত জমির মাটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেই নমুনা পরীক্ষার পর প্রত্যেক চাষিকে সয়েল হেলথ কার্ড দেওয়া হয়েছে। কৃষি আধিকারিকেরা তাঁদের সারের ব্যবহার বুঝিয়ে দিয়েছেন। এই খরচের ৬০ ভাগ কেন্দ্র বাকি ৪০ ভাগ রাজ্য দিয়ে এসেছে। ২০২০তে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দেয় এ বার একটি ব্লকের একটি গ্রামের বদলে বেশ কয়েকটি গ্রামের চাষিদের ডেকে সারের ব্যবহার বোঝাতে হবে। যে এলাকার মাটি পরীক্ষা হয়েছে, তার গুণাবলী বিচার করেই চাষিদের সারের ব্যবহারর সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। কিন্তু এ বছর আর নতুন করে মাটি পরীক্ষা হবে না। এর পরই বকেয়া নমুনা গুলির পরীক্ষা বন্ধ করে ১৩৩ জন মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষকের চাকরিতে ইতি টানে দফতর। অন্য রাজ্যে যদিও পরীক্ষাগারগুলি চলছে। রাজ্য কৃষি দফতর এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। এক কর্তার কথায়,‘‘আপাতত এক বছর বন্ধ থাকলেও ভবিষ্যতে মাটি পরীক্ষা হবে কি না তা জানা নেই। রাজ্য প্রকল্পটি চালাবে কি না, তা নবান্ন ঠিক করবে।’’