ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, করোনার টিকা প্রথমেই পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই ‘সীমাবদ্ধতায়’ তালিকা প্রস্তুত করতে হবে রাজ্যকেও। এই তালিকায় পুলিশ-প্রশাসনের সামনের সারিতে থেকে কাজ করা কোভিড-যোদ্ধাদের নাম দেওয়া যাবে না। অথচ তাঁরাও গত সাত মাস কোভিড মোকাবিলার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। এঁদের কী ভাবে টিকার আওতায় আনা যায়, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।
রাজ্যগুলিকে কেন্দ্র যা জানিয়েছে, তাতে কোভিড চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্তরাই প্রারম্ভিক পর্বে টিকা পাবেন। সেই তত্ত্বে চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাকর্মী, টেকনিশিয়ান-সহ হাসপাতালের মধ্যে নানা কাজে যুক্ত থাকা কর্মীদেরও প্রাথমিক টিকার তালিকাভুক্ত করা যাবে।
গত প্রায় সাত মাসে সামনের সারিতে থেকে কাজ করে প্রাণ হারানো কোভিড-যোদ্ধাদের তালিকায় চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী ছাড়াও রয়েছেন পুলিশ এবং সাধারণ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। লকডাউন পর্বে পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়ের মৃত্যু হয়েছিল গত জুলাই মাসে। তার পর থেকে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে একাধিক বিডিও-র। বৃহস্পতিবার সকালে মারা গিয়েছেন মন্দিরবাজারের বিডিও সৈয়দ আহমেদ (৫৬)। ডায়াবেটিক রোগী ওই বিডিও করোনা আক্রান্ত হয়ে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ দিন ভোর রাতে মারা গিয়েছেন নোদাখালি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অনিন্দ্য বসুও (৪৭)। কোভিড আক্রান্ত হয়ে তিনিও একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আরও পড়ুন: করোনা-আক্রান্তের কাছে বাজি কিন্তু আরও মারাত্মক বিষ
এই পরিস্থিতিও চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। ফলে টিকা বরাদ্দের ক্রমতালিকা তৈরিতে আগেভাগে প্রস্তুত থাকতে চাইছে রাজ্য। যদিও কোভিড চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মীদের পাশাপাশি কোভিড-ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ এবং সাধারণ প্রশাসনের কর্মী-আধিকারিকদেরও সামনের সারিতে থাকা যোদ্ধা হিসেবেই বিবেচনা করে রাজ্য প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে সরকারি স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, টিকাদানের পরবর্তী ধাপ থেকে পর্যায়ক্রমে তাঁদেরও তালিকাভুক্ত করার সুযোগ হয়ত দেবে কেন্দ্র। আনলক-৫ পর্বে বেশির ভাগ গতিবিধি নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৭ শতাংশ কোভিড মৃত্যুর নেপথ্যেই দূষিত বায়ু
তার উপরে চলতি উৎসবের মরসুমে মানুষের বিনোদন-গতিবিধিও আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। সব মিলিয়ে শীতের মরসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় নির্দিষ্ট একটি সূত্র না মানলে টিকার জোগান অনিশ্চিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাধাপ্রাপ্ত হবে প্রশাসনের গোটা পরিকল্পনাও।