প্রতীকী ছবি।
বঙ্গের কোভিড পজ়িটিভ রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। আর মৃত্যু থেকে দূরে থাকতে পারল না রাজ্যের সংশোধনাগারও। হুগলি জেলা সংশোধনাগারে থাকা এক বন্দির মৃত্যু হল। সোমবার রাতে মৃত্যু হয় বছর তেষট্টির ওই বন্দির। আর এই প্রথম রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হল কোনও বন্দির। তেমনই খবর কারা দফতর সূত্রে।
বধূ নির্যাতন সংক্রান্ত মামলায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে সংশোধনাগারে দিন গুজরান করছিলেন ওই বর্ষীয়ান নাগরিক। কয়েকদিন আগে খুব সামান্য জ্বর হয়েছিল তাঁর। তারপর থেকে ওই ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা হয় বলে সংশোধনাগার সূত্রে খবর। সোমবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় । রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ওই বিচারাধীন বন্দিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
৩০ জুলাই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তাঁর। মঙ্গলবার বিকেলে রিপোর্টে দেখা যায়, মৃতের শরীরে নোভেল করোনা ভাইরাস প্রবেশ করেছিল। ফলে করোনা রোগীর মৃত্যুর প্রোটোকল অনুসারে শেষকৃত্য হবে ওই বন্দির। একই মামলায় অভিযুক্ত হয়ে হুগলি সংশোধনাগারেই রয়েছেন মৃতের আরও দুই নিকট আত্মীয়।
বন্দির মৃত্যুর পরে এদিন হুগলি সংশোধনাগারে জীবাণুনাশের কাজ হয়। এদিকে, সিউড়িতে অবস্থিত বীরভূম জেলা সংশোধনাগারে সোমবার একদিনেই ৩৬ জন বন্দি করোনা আক্রান্ত হন। তারপরে এদিন সেখানেও জীবাণুনাশের কাজ হয়। বাকিদের নমুনা সংগ্রহের জন্য মেডিকেল টিমও গিয়েছে সেখানে।
ধীরে ধীরে হলেও রাজ্যের সংশোধনাগারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। একদা কর্মী-আধিকারিকদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি ছিল। তবে বেশিরভাগই এখন করোনা মুক্ত। তুলনায় বন্দিদের মধ্যে সংক্রমণ কম ছিল। কিন্তু সিউড়ির সংশোধনাগারে একসঙ্গে ৩৬ জনের আক্রান্ত হওয়ায় চিন্তা বেড়েছে কারা দফতরের। রাজ্যে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব পর্বের শুরু থেকে দফতরের নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে বলে দাবি বিভিন্ন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের। তারপরেও একজনের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক বলে মত অনেক কারা কর্তার। তেমনই এক কর্তার মতে, "পরিস্থিতি মোকাবিলায় ধারাবাহিকভাবে সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। তবুও মৃত্যুটা ঠেকানো গেল না।" সব মিলিয়ে রাজ্যের সংশোধনাগারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় নব্বই ছুঁতে চলল। এখন অবশ্য বেশিরভাগই করোনা মুক্ত বলে জানাচ্ছেন কারা আধিকারিকরা।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)