কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইডেন বিল্ডিং। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন দু’জন। হাসপাতালে ভর্তি এক প্রসূতি এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি পূর্ত দফতরের এক কর্মীর শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রমাণ মিলেছে। তাঁদের দু’জনকে বেলেঘাটা বা বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হতে পারে। এর জেরে আগামী দু’দিন কলকাতা মেডিক্যালের ইডেন বিল্ডিং বন্ধ রেখে জীবাণুমুক্তকরণের কাজ চলবে। ওই প্রসূতি বিভাগে ভর্তি অন্যান্য রোগী, ডাক্তার, নার্স এবং হাসপাতালকর্মী মিলিয়ে আরও ৫০ জনের ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের ইডেন বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিলেন করোনা আক্রান্ত ওই মহিলা। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময়ই তাঁর জ্বর ছিল। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর ফের জ্বর আসে। তার পর তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেই রিপোর্টেই পজিটিভ আসে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সবরকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইডেন বিল্ডিং আপাতত দু'দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জীবাণুমুক্তকরণের কাজ চলবে।’’
উত্তর কলকাতার বাসিন্দা ওই মহিলা কী ভাবে করোনায় আক্রান্ত হলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে তিনি কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তৈরি হচ্ছেতার একটি তালিকা। এর পাশাপাশি ওই মহিলার সন্তানের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হতে পারে বলেও হাসপাতাল সূত্রে খবর।এ নিয়ে স্বাস্থ্যভবনের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে আনা হবে। ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে পাঠানো হবে গৃহ পর্যবেক্ষণে।
আরও পড়ুন: কমেছে জ্বর, লক্ষণ নেই সংক্রমণের, সুস্থ হয়ে উঠছেন নুসরতের বাবা
ফের সংক্রমিত দুই চিকিৎসক, রাজ্যে করোনায় মৃত আরও ২
এর আগে, এনআরএস, হাওড়া, আরজি কর-সহ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে, কোথাও রোগীর মৃত্যুর পর, আবার কোথাও সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা চলাকালীন রোগীর করোনা ধরা পড়েছে। ফলে ওই ওয়ার্ডগুলি থেকে রোগীদের সরিয়ে সেখানে জীবাণুমুক্ত করতে হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠানো হয়েছে গৃহ পর্যবেক্ষণেও। এমনকি, রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ডাক্তারও।
তা নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসা মহলের একাংশ। কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করোনার লক্ষণ প্রথমে ধরা পড়ছে না। পরে যখন তাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেনহাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকদের একাংশের মত, ন্যূনতম করোনা উপসর্গ মনে হলেও তাঁদের করোনা টেস্ট করাতে হবে। সেই সঙ্গে করোনা ওয়ার্ডে রাখতে হবে ওই রোগীদের।
একই সঙ্গে যাঁরা হাসপাতালে কাজ করছেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) পরে কাজ করা উচিত বলে মনে করছে চিকিৎসক মহল।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)