ছবি: পিটিআই।
করোনা-আক্রান্তের নিরিখে এলাকা চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ম্যাপ তৈরি করে সংক্রমণের এলাকাগুলি চিহ্নিত করে সেখানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা হচ্ছে। রাজ্য সরকার লক্ষ্য করেছে, বেশিরভাগই রোগীই পারিবারিক সূত্রে আক্রান্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে বাড়তি সতর্ক থাকার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। চলতি পরিস্থিতিকে গোষ্ঠী সংক্রমণ (কমিউনিটি স্প্রেড)-এর সঙ্গে তুলনা করে এখন থেকেই লকডাউন পরবর্তী পরিকল্পনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজ্যের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন আট জন আক্রান্তকে ধরে এখন মোট করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘গত কাল (সোমবার) আমি বলেছিলাম, করোনা-আক্রান্ত ৬১ জন। আটটা বেড়ে হয়েছে ৬৯। ন’টি পরিবার থেকে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আটটার মধ্যে চারটিই হচ্ছে পারিবারিক কেস। পারিবারিক ব্যাপারটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। ইন্ডিভিজুয়াল নয়, কমিউনিটি স্প্রেড। এটা থেকেই আমরা সবাইকে বলছি, নিজেদের সরিয়ে সরিয়ে রাখুন। বাড়িতে একসঙ্গে খাই, থাকি। একটা মাস্ক ব্যবহার করুন। হাতটা ভাল করে ধুয়ে নিন। এটুকু করলে যতটা পারি ঠেকাতে পারি।’’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান, রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা তিন থেকে বেড়ে হয়েছে পাঁচ। তিনি বলেন, ‘‘আগে আমরা বলেছিলাম মৃত্যু তিন জনের। অডিট রিপোর্টের পরে আজ মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচে এসেছে। কারণ, বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। এমস থেকে শুরু করে সবাই করেছেন। আমরা বললে আপনাদের মনে হয় ভুল বলছি কি না।’’ স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে রাজ্যে এ পর্যন্ত ১৪৭৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১২১৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকা ৪৯১১৪ জনের মধ্যে ৬০১০ জনের পর্যবেক্ষণের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
মমতার দেওয়া করোনা-তথ্য
• করোনা পজ়িটিভ ৬৯।
• মৃতের সংখ্যা ৫।
• ৬০ জন আক্রান্ত ন’টি পরিবার থেকে।
• এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে সাতটি এলাকা চিহ্নিত করে পদক্ষেপের পরিকল্পনা।
• পান ও ফুল চাষি এবং বিড়ি শ্রমিকদের ছাড়।
সরকারের দাবি, রাজ্যে করোনা-আক্রান্তদের সংখ্যা সাতটি এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। মুখ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাংলায় একটা ছোট জায়গার মধ্যে এখনও পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রয়েছে—সাতটি এলাকা। ওইটুকু জায়গার মধ্যে এটা ভাল করে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেই জন্য এই জায়গাগুলোয় বেশি করে নজর দিতে হবে। কোন কোন জায়গা, আমরা তা চিহ্নিত করেছি। পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে, কী করে এই সব জায়গায় এটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।’’
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কালিম্পং, কমান্ড হাসপাতাল, তেহট্ট, এগরা, হাওড়া, কলকাতা এবং হলদিয়ায় করোনা-আক্রান্তদের উপস্থিতি আছে। এই সাতটি এলাকাকে ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কি না, তা এ দিন স্পষ্ট করেননি তিনি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সব কিছু কি বলা উচিত? আতঙ্ক ছড়িয়ে কী লাভ।’’
লকডাউন উঠলেই বাইরে আটকে থাকা বহু মানুষ রাজ্যে ফিরে আসবেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘লকডাউন উঠবে কি না জানি না। উঠলে বিমানে-ট্রেনে করে বহু মানুষ চলে আসবেন। তাঁদের সেফ-হাউসে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।’’