গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কেন্দ্র দায়িত্ব নিলেও টিকাকরণ নিয়ে উদ্বেগ এখনও কাটেনি পুরোপুরি। তবে প্রায় দু’মাস পর দৈনিক করোনা সংক্রমণ ৫ হাজারের নীচে নামল রাজ্যে। বৃহস্পতিবার যেখানে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছিলেন ৫ হাজার ২৭৪ জন। সেখানে শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলার ৪ হাজার ৮৮৩ জন মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। অর্থাৎ গতকালের চেয়ে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৯১ জন কম।
সংক্রমণ যদিও কমেছে, রাজ্যে দৈনিক মৃত্যু কিন্তু গতকালের চেয়ে বেড়েছে। প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় পর গত মঙ্গলবার রাজ্যে দৈনিক মৃত্যু ১০০-র নীচে নামে। তার পর দু’দিন সংখ্যাটা ক্রমশ কমতে থাকলেও, শুক্রবার তা বেড়ে ৮৯ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যে ৮৭ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এর মধ্যে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনাতেই ২০ জন করে করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। নদিয়ায় ১০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। এ ছাড়াও হুগলি (৬), পূর্ব মেদিনীপুর (৫), জলপাইগুড়ি (৫) দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৪), পূর্ব বর্ধমান (৪), বাঁকুড়া (৪), দার্জিলিং (৩), মালদহ (২), হাওড়া (২) থেকেও করোনা রোগীদের মৃত্যুর খবর মিলেছে। উত্তর দিনাজপুর, বীরভূম, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরেও ১ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন।
জেলাগুলির মধ্যে দৈনিক সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি উত্তর ২৪ পরগনায়। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে ৭৯২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। কলকাতায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৪২২ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিংয়ে দৈনিক সংক্রমণ ৩০০-র উপরে রয়েছে। সেই তুলনায় সুস্থতা অনেকটাই নীচে। বুধবার পর্যন্ত দৈনিক সুস্থতা যেখানে ১০ হাজারের উপরে ঘোরাফেরা করছিল, বৃহস্পতিবার তা কমে ৫ হাজার ১৭০ হয়। শুক্রবার তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩২১।
প্রতিদিন যত সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষা হয়, এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে সংক্রমণের হার বলা হয়। বৃহস্পতিবারের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যে সংক্রমণের হার ছিল ৮.১২ শতাংশ। শুক্রবার তা বেড়ে ৮.৪২ হয়েছে। পরীক্ষা ও টিকাকরণে ঢিলেমিই সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার টিকাকরণের যে হিসেব পাওয়া গিয়েছিল, তাতে ২ লক্ষ ৩০ হাজার ১৯৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় টিকা পেয়েছেন ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ২৭০ জন, অর্থাৎ ৩৩ হাজার ৯২৭ জনের ব্যবধান। একই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষাও কমেছে। বৃহস্পতিবার যেখানে ৬৬ হাজার ২৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল, শুক্রবার পরীক্ষা হয়েছে ৬২ হাজার ৬১৪ জনের।