গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
রাজ্য জুড়ে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা জুলাইয়ের পর থেকে সবচেয়ে কমল। তবে শনিবার কলকাতায় কোভিড রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফের দুশ্চিন্তায় স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। যদিও গোটা রাজ্যের মতোই এ শহরে দৈনিক আক্রান্তের তুলনায় সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
শনিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৫৩ জন। যা ১৪ জুলাইয়ের পর সর্বৃনিম্ন। ওই দিন গোটা রাজ্যে ১ হাজার ৩৯০ জনের দেহে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, শনিবার গোটা রাজ্য়ে ১ হাজার ২৫৩ জনের মধ্য়ে সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৫ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লক্ষ ২২ হাজার ৩৩১ জন। ফলে এই মুহূর্তে সংক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজার ১০৮।
আরও পড়ুন: মার্চেই দেশে ছিল দ্রুত গতির কোভিড স্ট্রেন, দাবি আইজিআইবি-র ডিরেক্টরের
আরও পড়ুন: মডার্নার প্রতিষেধকে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া, আমেরিকায় গুরুতর অসুস্থ চিকিৎসক
আক্রান্তের সংখ্যা আগের থেকে কমার পাশাপাশি সুস্থ রোগীর পরিসংখ্যানেও উন্নতি দেখা গিয়েছে। শনিবার আক্রান্তের তুলনায় সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১ হাজার ৮৬১ জন কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে অনুযায়ী, শনিবার সুস্থতার হার দাঁড়িয়েছে ৯৫.৬৬ শতাংশে। আগের দিনের থেকে তা সামান্য বেড়েছে। শুক্রবার তা ছিল ৯৫.৫৪ শতাংশ।
দৈনিক সুস্থতার হার বাড়লেও শনিবার ৩৩ জন সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে শুধুমাত্র কলকাতাতেই ১২ জন মারা গিয়েছেন। কলকাতা ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৪, মালদহ এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ২ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন। এ ছাড়া, কোচবিহার, দার্জিলিং, নদিয়া, পুরুলিয়া এবং হাওড়াতে ১ জন করে আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে এ রাজ্যে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লক্ষ ৫৬৯-এ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
অতিমারির আবহেও বড়দিন উপলক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন দর্শণীয় স্থানে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। ঘটনাচক্রে, তার পরের দিনই দৈনিক সংক্রমণের হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’ ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। শুক্রবার সংক্রমণের হার ৩.৮৪ শতাংশ হয়েছিল। তবে শনিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.০৯ শতাংশে। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড টেস্টের সংখ্যা কমেছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এক দিনে ৩০ হাজারের বেশি কোভিড টেস্ট হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় মৃতের সংখ্যা বাড়লেও আক্রান্তের সংখ্য়া কমেছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলটিন অনুযায়ী, শনিবার এ শহরে ২৬২ জনের মধ্যে কোভিডের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। কলকাতায় সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ২১ হাজার ৯২২ জন সংক্রমিতের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যদিও তার মধ্যে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৬১৩ জন পুরোপুরি সেরে উঠেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। ফলে এই মুহূর্তে শহরে সংক্রিয় রোগী সংখ্যা ৩ হাজার ৩৯৩। এ ছাড়া, আক্রান্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত শহরে ২ হাজার ৯১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কলকাতা ছাড়াও উদ্বেগ বাড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। ওই জেলায় এক দিনে ২৭০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি, জেলায় মোট ২ হাজার ২৯৩ জন সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)