গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আটের ঘর পার করল কেস পজ়িটিভিটির হার। শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১,১২৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৩৪০ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের। এদিনের বুলেটিনের নিরিখে রাজ্যের কেস পজ়িটিভিটির হার হল ৮.১২%।
গত ২৩ অগস্টের (৩২৭৪) পরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বঙ্গে তিন হাজার তিনশোর ঊর্ধ্বে ওঠেনি এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা। ঠিক যেমন গড়ে পঁয়তাল্লিশ হাজারের ঘরেই আটকে রয়েছে এক দিনে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা। ২৫ অগস্ট আট শতাংশের নীচে নামে কেস পজ়িটিভিটির হার। এরপর থেকে কোনও পরিস্থিতিতেই নমুনা পরীক্ষার নিরিখে পজ়িটিভ হওয়ার হারকে আট শতাংশের উপরে উঠতে দেয়নি স্বাস্থ্য ভবন। বুধবার এ রাজ্যে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন রেকর্ড (৩২৮১) তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার সেই রেকর্ডকে অতীত করে ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজ়িটিভের সংখ্যা হয় ৩৩১০। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’দফায় আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ হলেও দিনের শেষে কেস পজ়িটিভিটির হার আট শতাংশের নীচেই ছিল। বুধবার তা ৭.৪৯ শতাংশ হলে, শুক্রবার সেই হার ছিল ৭.৬৪ শতাংশ।
শুক্রবার ৪৩২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৩১০ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছিল। সেই তুলনায় কম সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করে এ দিন অনেক বেশি আক্রান্তের হদিস মিলেছে। এ দিন যে মোট ৪১১২৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে আরটি-পিসিআর-সহ অন্য পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২০৫৮৫ জনের। র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়েছে ২০৫৪৩ জনের।
আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে হাসপাতালের উপরেও চাপ তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যের প্রথম সারির কোভিড হাসপাতালের প্রশাসক-চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, সরকারি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যায় বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রতি দিন কোভিড চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানকারী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কত শয্যা খালি রয়েছে সেই সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন সন্ধ্যায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আমরি মুকুন্দপুর, অ্যাপোলো, বেলভিউ, সিএমআরআই, ফর্টিস, পিয়ারলেস— কোথাও কোনও বেড খালি নেই। সারা রাজ্যে বেসরকারি ক্ষেত্রে ৬৫টি হাসপাতালে ২৭৫৪টি বেডের মধ্যে মাত্র ৬৯৮টি বেড খালি রয়েছে। সিসিইউ বেডের জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা হচ্ছে হাসপাতালগুলির।
এরই মধ্যে এ দিন বাইরে থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষা নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে বলা হয়েছে, মেডিক্যাল কলেজ-সহ জেলা হাসপাতালে ল্যাবরেটরির পরিকাঠামোর মানোন্নয়নের পাশাপাশি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। তাই যে সব পরীক্ষার পরিকাঠামো হাসপাতালে বা নিকটবর্তী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে রয়েছে, তা বাইরে থেকে করানো যাবে না।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)