প্রতীকী ছবি।
কোভিড লডাইয়ে অস্ত্র হোক নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাবৃদ্ধি (অ্যাগ্রেসিভ টেস্ট), আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের সন্ধান (অ্যাগ্রেসিভ ট্রেসিং) ও যথাযথ আইসোলেশন নীতি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর আয়োজিত ওয়েব-মঞ্চে মহারাষ্ট্রের টাস্ক ফোর্সের সদস্য চিকিৎসক তথা ইন্ডিয়ান কলেজ অব ফিজিসিয়ানস’এর ডিন শশাঙ্ক যোশী জানিয়ে দিলেন, এই তিন পদক্ষেপের উপরে নির্ভর করছে সংক্রমণ থেকে মুক্তির উপায়।
গত রবিবার ওয়েবিনারে সংক্রমণের চূড়ায় পৌঁছনো নিয়ে প্রশ্ন করেন এ রাজ্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য তথা এসএসকেএমের মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষ। উত্তরে পদ্মশ্রী-প্রাপ্ত এন্ডোক্রিনোলজিস্ট চিকিৎসক শশাঙ্ক বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র সার্বিক ভাবে সংক্রমণের চূড়ায় পৌঁছেছে বলে মনে হয় না। আমি মনে করি, বাংলার সংক্রমণের চূড়ায় পৌঁছতে আরও অন্তত সপ্তাহ দু’য়েক দেরি রয়েছে।’’
নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাবৃদ্ধির উপরে জোর দিয়েছেন ভিন্ রাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। মার্চের পর থেকে গত ১৫ অগস্ট পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩১ লক্ষ ১১ হাজার ৫১৪। কেস পজ়িটিভিটির হার ১৮.৭৯%। ১৫ অগস্ট পর্যন্ত বাংলায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ লক্ষ ৮২ হাজার ৪৮৬। করোনা ধরা পড়ে এক লক্ষ ১৩ হাজার ৪৩২ জনের। কেস পজ়িটিভিটির হার ৮.৮৪%।
চিকিৎসক শশাঙ্কের কথায়, ‘‘গোড়ায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করার প্রশ্নে আমরাও পিছিয়ে ছিলাম। এখন চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন না থাকলেও কোনও ল্যাবে গিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিজেই পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন!’’ যার পরিপ্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, বাংলায় চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া নমুনা পরীক্ষা করানো তো দূর। বেসরকারি ল্যাবে প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যায় যে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছিল তারই রাশ টেনে ধরা হয়েছে! আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার প্রশ্নেও তথৈবচ অবস্থা বলে মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ওই অংশের। নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি হোম কোয়রান্টিনের বদলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনের উপরেই জোর দিয়েছেন শশাঙ্ক।
বহুতলের তুলনায় বস্তিতে সংক্রমণের হার কেন কম? ধারাভির উদাহরণ টেনে শশাঙ্ক বলেন, ‘‘মুম্বইয়ে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বস্তি এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ৫০% বাসিন্দার দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমার মতে, বস্তিবাসীরা সংক্রমণের শিকার হলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল হওয়ার দরুণ ভাইরাসের সঙ্গে যুঝে নিতে পারেন।’’ সঙ্গে বিধিসম্মত সতর্কীকরণ, যদি না সেই লড়াইয়ে কো-মর্বিডিটি প্রতিকূলতা তৈরি করে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)