গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কোভিড-আক্রান্তের সংখ্যাটা ২ লক্ষ পেরিয়েছিল রবিবার। সোমবার ৪ হাজার পেরিয়ে গেল করোনায় মৃতের সংখ্যা। এক দিনে আক্রান্ত হলেন ৩ হাজারেরও বেশি। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও ফের পার করল ৫০-এর গণ্ডি। এক নজরে এটাই স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত এ দিনের বুলেটিন।
দিন দশেক ধরেই রাজ্যে দৈনিক তিন হাজারের বেশি সংক্রমণ ঘটছিল। এ দিনও সেই একই প্রবণতা বজায় রইল। তবে সংক্রমণের হারে সামান্য উন্নতির পাশাপাশি বেড়েছে সুস্থতার হারও। সেই সঙ্গে আগের থেকে দৈনিক কোভিড টেস্টও বেশি করানো হয়েছে। তবে এক দিনে গোটা রাজ্যে মৃতের সংখ্যাতে রবিবারের তুলনায় কোনও হেরফের হয়নি।
এ দিন রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২১১ জন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ২ লক্ষ ৫ হাজার ৯১৯ জন করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
এ রাজ্যে গত কালই কোভিড-রোগীর সংখ্যা ২ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়েছিল। তবে দৈনিক তিন হাজার করে আক্রান্তের পাশাপাশি সুস্থতার হার ঊর্ধমুখী হওয়া খানিকটা স্বস্তি দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ২২৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় কোভিড-আক্রান্ত ২৩ হাজার ৬৯৩ জন। তবে গত কালের থেকে এ দিন কোভিড টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা রাজ্যে ৪৭ হাজার ৫৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত কাল ৪৭ হাজার ৩১৮টি কোভিড-টেস্ট হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সকলের জন্য করোনা-টিকা ২০২৪-এর আগে নয়, দাবি সিরাম ইনস্টিটিউটের
আরও পড়ুন: যাত্রী হাতেগোনা, কিন্তু মেট্রোর স্লট বুকিং ভিডিয়ো দেখতে ভিড় তুঙ্গে
গত কালের সঙ্গে তুলনা করলে সুস্থতার হার সামান্য হলেও ঊর্ধ্বমুখী— ৮৬.৫৫ শতাংশ। গত কাল শতাংশের হিসাবে যা ছিল ৮৬.৪০।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
সুস্থতার হারের উন্নতির মতোই কমেছে সংক্রমণের হারও। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নিরিখে সংক্রমণের হার ৬.৭৫ শতাংশ। গত কাল তা ছিল ৬.৭৫ শতাংশে। প্রতি দিন যত জনের কোভিড টেস্ট করানো হয় এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এই হার যত কম হবে, ততই তা স্বস্তিদায়ক।
আরও পড়ুন: নিট-পড়ুয়াদের নিয়ে টুইট, ভুল অনুবাদেই বিচারপতির রোষে তামিল সুপারস্টার সূর্য!
আরও পড়ুন: মোদী-মমতা-সনিয়া থেকে তেন্ডুলকর, সবার উপর গোপন নজরদারি চিনের!
সুস্থতা বা সংক্রমণের হারে তুলনামূলক ভাবে স্বস্তিদায়ক হলেও কোভিডে দৈনিক মৃত্যুর ঘটনায় রাশ টানা যাচ্ছে না। গত কালের মতোই এ দিনও রাজ্য জুড়ে ৫৮ জন সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৩ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
সংক্রমণের নিরিখে প্রথম থেকেই এগিয়ে রয়েছে কলকাতা। তবে সাম্প্রতিক কালে সেই প্রবণতায় বদল দেখা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কলকাতার থেকে এক দিনে উত্তর ২৪ পরগনায় বেশি সংক্রমণ ঘটেছে। বুলেটিন অনুযায়ী ওই জেলায় এক দিনে ৫৫৯ জনের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সেই সঙ্গে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৪৪), দার্জিলিং (১৪৯), মুর্শিদাবাদ (১০৩), নদিয়া (১০২), বাঁকুড়া (১২৯), পশ্চিম মেদিনীপুর (২৬৩), পূর্ব মেদিনীপুর (১৩৮), হাওড়া (১৪৫), হুগলি (২৬১) জেলার পরিসংখ্যানও।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে কলকাতা দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও মৃত্যুর সংখ্যা হিসাবে মহানগর রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। এর পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ১০ জন মারা গিয়েছেন। এ ছাড়া, আলিপুরদুয়ার, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে ১ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন। পাশাপাশি, পূর্ব মেদিনীপুর, কোচবিহার ও পুরুলিয়ায় ২ জন করে, নদিয়ায় ৩, হাওড়ায় ৬, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫ জন করে সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)