গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পর পর দু’দিন তিন হাজারের উপরে থাকার পরে ফের তা নিম্নগামী। এক দিনে সবচেয়ে বেশি কোভিড রোগী সেরেও উঠলেন। ফলে সুস্থতার হারও বৃদ্ধি পেল।
সোমবার রাতে স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ৩১৮ জন করোনা সংক্রমণের থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। যার জেরে সুস্থতার হার দাঁড়িয়েছে ৮২.৮৯ শতাংশে। যা রবিবারের থেকে বেশি। গত কাল তা ছিল ৮১.৯৬ শতাংশ।
তবে গত দু’দিন ধরে একটানা তিন হাজারের গণ্ডি পার করার পর এই প্রথম করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৯৩ জন। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৭৭৮ জন। তার মধ্যে সেরে উঠেছেন ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ২৭০ জন। এই মুহূর্তে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ২৮০।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
সুস্থতার হার বাড়লেও এ দিন গত কালের থেকে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ জন কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন। গত কাল ওই সংখ্যাটা ছিল ৫০। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, করোনার কারণে এখনও পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ২২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থতার হার বাড়লেও গত কয়েক দিন ধরেই মৃতের সংখ্যা প্রায় একই অর্থাৎ ৫০-এর কোঠায় থাকছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
গত কয়েক দিন ধরেই কোভিড টেস্টের সংখ্যা বেড়েছে। তবে গত কালের থেকে এ দিন নমুনা পরীক্ষা কম হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার ২৩৯টি কোভিড নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। রবিবার যা ছিল এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ৪৩ হাজার ৪৩৬টি। এ দিন সব মিলিয়ে রাজ্যে মোট ১৮ লক্ষ ৮৭ হাজার ৬৩৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতি দিন যত জনের কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় শতাংশের হিসাবে তা হল ৭.০৯।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
গোড়া থেকেই এ রাজ্যে কোভিড রোগী সংখ্যা কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে। তবে গত কয়েক দিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যায় কলকাতাকে ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৯৪ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এ দিন ওই জেলায় নতুন করে সংক্রমণ ঘটেছে ৪৬৭ জনের মধ্যে। তার পরেই রয়েছে কলকাতা। এ শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪৪ জন।
আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৭৮৫১২, ফের বাড়ল সংক্রমণ হার
আরও পড়ুন: প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়, রাইসিনা হিলে ওঠা একমাত্র বাঙালি
উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতা ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণের নিরিখে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর (৩১৬), হাওড়া (১০৪), পূর্ব মেদিনীপুর (১৮২), হুগলি (১১৫), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৮৬), নদিয়া (১৮৩), কোচবিহার (১৩০), দার্জিলিং (১১৫) এবং জলপাইগুড়ি (১৩১) জেলা।
আরও পড়ুন: কীর্ণাহার থেকে রাইসিনা: চাণক্যের চড়াই-উৎরাই যাত্রাপথ
আরও পড়ুন: দেশের বিকাশে প্রণবের ভূমিকা স্মরণ মোদীর || পিতৃসম ছিলেন, বললেন মমতা
সংক্রমণের পাশাপাশি মৃতের পরিসংখ্যানেও গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা (১০ জন) ছাড়া বিভিন্ন জেলা চিন্তা বাড়াচ্ছে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমানে ১ জন করে কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন। অন্য দিকে, নদিয়া, হুগলিতে ৪ জন করে এবং উত্তর ২৪ পরগনায় ১৩ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৯ জন, হাওড়া ও পূর্ব মেদিনীপুরে ৩ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)