Coronavirus in West Bengal

গত দু’মাসের মধ্যে সংক্রমণের হার সর্বনিম্ন, সুস্থতার হার ৮৪.০২ শতাংশ

কলকাতায় এই মুহূর্তে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ১৭৮। মৃত্যু হয়েছে মোট ১ হাজার ৩৩৩ জনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:১১
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সপ্তাহখানেক ধরেই করোনায় দৈনিক সংক্রমণের তুলনায় সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা বেশি হচ্ছিল। বৃহস্পতিবারও সেই একই ধারা অব্যাহত রইল। গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে সুস্থতার হার। সেই সঙ্গে কমেছে সংক্রমণের হারও। গত দু’মাসের মধ্যে এ দিনই সংক্রমণের হার সবচেয়ে কম দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি, করোনাকালে দৈনিক নমুনা পরীক্ষার পরিসংখ্যানের নিরিখে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টেস্টও হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে করোনার সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৯৮৪ জন। তবে ওই সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৩৩৫ জন। ওই বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার ৮৪.০২ শতাংশ।

গত কাল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৭৬। এবং এক দিনে করোনা থেকে সেরে উঠেছিলেন ৩ হাজার ২৯৭ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৬৮১। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৪৮ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৩৯। গত কাল এই সংখ্যাটাই ছিল ২৪ হাজার ৪৪৫।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

সুস্থ হয়ে উঠার সংখ্যাটা বেশি হলেও গত কয়েক দিনে করোনায় মৃতের সংখ্যাটা ৫০-এর ঘরেই ঘোরাফেরা করছে। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত কাল মৃত্যু হয়েছিল ৫৬ জনের। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৩৯৪ জনের।

আরও পড়ুন: কোভিড-লকডাউনে মদ থেকে আয়ে ঘাটতি প্রায় নেই রাজ্যের

আরও পড়ুন: করোনাকালে সর্বোচ্চ পরীক্ষার দিনেই নতুন আক্রান্ত প্রায় ৮৪ হাজার!​

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ দিন পর্যন্ত মোট ২০ লক্ষ ২০ হাজার ৭৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। দৈনিক নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার নিরিখে গত ২৪ ঘণ্টায় এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ৪৫ হাজার ২৯১টি টেস্ট করানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে সংক্রমণের হার। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করানো হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এ দিনের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, সংক্রমণের হার ৬.৫৯ শতাংশ। গত কাল তা ছিল ৬.৭৫ শতাংশ।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

দৈনিক সুস্থতার সংখ্যাটা সন্তোষজনক হলেও কলকাতায় এ দিন গত কালের থেকে সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ শহরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭২ জন। গত কাল যা ছিল ৩৯৩। কলকাতায় মোট কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৫৭৩। তার মধ্যে সেরে উঠেছেন ৩৬ হাজার ৬২ জন। ফলে এ শহরে এই মুহূর্তে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ১৭৮। মৃত্যু হয়েছে মোট ১ হাজার ৩৩৩ জনের। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ১৫।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

ওই সময়ের মধ্যে করোনায় মৃত্যুর নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলাতে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১২ জন কোভিড রোগীর। এ ছাড়াও হাওড়ায় ৬ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫ জন, হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুরে ৩ জন করে, পুরুলিয়া ও নদিয়ায় ২ জন করে এবং দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমানে ১ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন।

রাজ্যের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেড়েছে কোচবিহারে (৯৩ জন)। এর পরেই রয়েছে জলপাইগুড়ি (৭০ জন), আলিপুরদুয়ার (৬৫ জন), বাঁকুড়া (৪৭ জন) এবং কলকাতা (৪০ জন)।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)


(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement