Coronavirus in West Bengal

ঘরের অভাবে দশ দিন তাঁবুতেই করোনা আক্রান্ত

উপসর্গহীন ওই আক্রান্তের পরিবার সূত্রের খবর, তাদের বাড়িতে মাত্র দু’টি ঘর। আর পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডেবরা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২১ ০৫:২৪
Share:

ফাইল চিত্র।

ব্লকে রয়েছে সেফ হোম। চলছে কোভিড হাসপাতাল গড়ার প্রস্তুতি। তবু পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ডুঁয়া-২ পঞ্চায়েতের ঘোলই গ্রামের বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত খড়্গপুর আইআইটির এক নিরাপত্তারক্ষীকে থাকতে হচ্ছে মাঠে। তাঁবু খাটিয়ে। একদিন, দু’দিন নয়। টানা দশদিন।

Advertisement

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গযুক্ত আক্রান্তদের গৃহ নিভৃতবাসে থাকার বিষয়ে রয়েছে নির্দেশিকা। তা হলে কেন খোলা মাঠে তাবু টাঙিয়ে থাকতে হচ্ছে?

উপসর্গহীন ওই আক্রান্তের পরিবার সূত্রের খবর, তাদের বাড়িতে মাত্র দু’টি ঘর। আর পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮। অর্থাৎ করোনা আক্রান্তের পক্ষে আলাদা একটি ঘরে নিভৃতবাস সম্ভব নয়। কিন্তু ব্লকে তো সেফ হোম রয়েছে! স্থানীয় সূত্রে খবর, করোনা আক্রান্ত ওই নিরাপত্তারক্ষীর (বেসরকারি সংস্থার কর্মী) বাড়ি থেকে সেফ হোমের দূরত্ব মেরেকেটে দেড় কিলোমিটার। তা হলে? প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেফ হোমে পাঠানোর কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে দাবি করোনা আক্রান্তের। ওই ব্যক্তির স্ত্রী বলেন, “স্থানীয় আশাকর্মী খোঁজ নিচ্ছেন। স্বামী করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে আমাদের সমস্যা আমরা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছিলাম। গত বার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিভৃতবাস খোলা হয়েছিল। তাই সেখানে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু এ বার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখার অনুমতি নেই বলে জানানো হয়। কোনও পথ না দেখে এ ভাবেই থাকতে হয় স্বামীকে।”

Advertisement

দিন দু’য়েক আগে গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটি ত্রিপল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঝড়, বৃষ্টি, রোদে দুর্ভোগ সেই তিমিরেই। বিষয়টি জানাজানি হতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে সেফ হোমে পাঠানোর কথা জানালেও ওই করোনা আক্রান্ত রাজি হননি।

ঘর নেই। পরিবারের অন্যদের বাঁচাতে তাই খোলা আকাশের নীচেই নতুন ঠিকানা করে নিয়েছেন ওই করোনা রোগী। প্রশাসন দেরিতে কাছে গেলেও ‘অভিমানে’ দূরেই রইলেন করোনা আক্রান্ত। কেন সেফ হোমে যেতে রাজি হলেন না? ওই করোনা আক্রান্তের জবাব, ‘‘আপাতত সুস্থ রয়েছি। রোদ, ঝড়, জলে একটু কষ্ট হচ্ছে। এতদিন যখন কোনও সুব্যবস্থা হয়নি তখন আর ক’টা দিন এভাবেই কাটিয়ে দেব।”

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার ডেবরার বিডিও শিঞ্জিনী সেনগুপ্ত বলেন, “বৃহস্পতিবার ওঁর (করোনা আক্রান্ত নিরপত্তারক্ষীর) স্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। ওই করোনা আক্রান্ত নিজেই সেফ হোমে থাকতে চান না। ওঁর কোনও সমস্যাও নেই বলে স্ত্রী জানিয়েছেন। তাছাড়া ওঁর যেহেতু কোনও উপসর্গ নেই তাতে ওঁর সেফ হোমে থাকার প্রয়োজন নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement