Coronavirus

জোগান বাড়লেও পিপিই-র ঘাটতি ও মান নিয়ে নালিশ

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের ক্ষোভ, বহির্বিভাগে তাঁদের রোগী দেখতে হচ্ছে মুখে একটা সাধারণ ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’ পরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০২:০১
Share:

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের ক্ষোভ, জেনারেল ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীদের দেখার সময়ে পিপিই মিলছে না।

জটিল করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বরাদ্দ বর্মবস্ত্র বা পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই)-এর গুণমান নিয়ে সরব হলেন বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের একাংশ। একই বিষয়ে মুখ খুলেছে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনও। করোনা যুদ্ধে সামনের সারিতে থাকা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পিপিই বরাদ্দ হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের দাবি, ‘‘যথেষ্ট সংখ্যক পিপিই আছে। যেখানে যেখানে দরকার হচ্ছে, আমরা পাঠাচ্ছি।’’

Advertisement

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের ক্ষোভ, বহির্বিভাগে তাঁদের রোগী দেখতে হচ্ছে মুখে একটা সাধারণ ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’ পরে। জেনারেল ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীদের দেখার সময়ে পিপিই মিলছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, যাঁরা জ্বর বা ফিভার ক্লিনিক এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে কর্মরতদেরই পিপিই দেওয়া হচ্ছে। আইএমএ-র পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক অজিত মুর্মু জানান, স্পেশাল কোভিড হাসপাতালে যাঁরা কাজ করছেন এবং স্পেশাল অ্যাম্বুল্যান্স চালকদেরও দেওয়া হচ্ছে। পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে পিপিই পর্যাপ্ত রয়েছে।

বাঁকুড়া মেডিক্যালের চিকিৎসদের একাংশের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতিতে প্রায়ই সন্দেহজনক উপসর্গ নিয়ে কিছু রোগীকে মেডিসিন বা অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হচ্ছে। তবে সেই ওয়ার্ডের চিকিৎসকদের পিপিই দেওয়া হয়নি। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আইসোলেশন বা ফিভার ওয়ার্ডে পিপিই দেওয়া হচ্ছে। জরুরি বিভাগ বা হাসপাতালের অন্য ওয়ার্ডেও কিছু পিপিই রাখা হয়েছে। করোনার মতো উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে কেউ ভর্তি হলে তাকে সাধারণত ফিভার ওয়ার্ড বা আইসোলেশনেই ভর্তি করা হয়।

Advertisement

কিট বিলি

• পিপিই ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার
• এন ৯৫ মাস্ক ২ লক্ষ ৪৫ হাজার
• সাধারণ মাস্ক ১৭ লক্ষ
• স্যানিটাইজ়ার ৮৬ হাজার লিটার
• পাঁচ হাজার থার্মাল গান পাওয়া যাবে বলে আশা সরকারের

তথ্য সূত্র: রাজ্য সরকার

ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে পিপিই-র সরবরাহ থাকলেও অধিকাংশ গ্রামীণ হাসপাতালে তা পৌঁছয়নি। ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ মহকুমার যে এলাকায় সংক্রমণ হয়েছে, সেখানে গ্রামীণ হাসপাতালে কিছু চিকিৎসকের জন্য জেলা থেকে পিপিই পাঠানো হয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশের।

আরও পড়ুন: ছাড়ের সুযোগে সচল কৃষিক্ষেত্র, বন্ধই রইল চটকল

আরও পড়ুন: মাথাপিছু ১ হাজার টাকা, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘স্নেহের পরশ’ রাজ্যের

অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্স-এর তরফে মানস গুমটা বলেন, ‘‘আগের থেকে পিপিই সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। জেলা হাসপাতালে অভাব রয়েই গিয়েছে। পিপিই-র গুণমান নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে চেন টানলেই ছিঁড়ে যাচ্ছে। মাপেরও গোলমাল আছে।’’ সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের তরফে সজল বিশ্বাসও জানান, আগের তুলনায় সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু রামপুরহাট, পুরুলিয়া, কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে ঘাটতি রয়েছে। আইসোলেশন ওয়ার্ডেও পিপিই অমিল। মহকুমা স্তরে ছবিটা আরও খারাপ। প্রায় ৫০% পিপিই-র মান ভাল নয় বলে অভিযোগ।

একটি সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, ১০০% উচ্চমানের পিপিই হয়তো সরবরাহ করা যাচ্ছে না। কারণ এই পরিস্থিতির কোনও পূর্বাভাস ছিল না। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পিপিই তৈরি করে, জোগাড় করে সরবরাহ করা হচ্ছে। কেন্দ্র ১০ হাজারও পিপিই দিতে পারেনি। সত্ত্বেও পিপিই দেওয়া নিয়ে সরকারের সদিচ্ছার কোনও অভাব নেই। পিপিই নিয়ে কোনও কোনও মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অভিযোগ করছে বলে ওই সূত্রের দাবি। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ৩.৫ লক্ষের বেশি পিপিই দেওয়া হয়েছে।


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement