ছবি: এএফপি।
করোনা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গে ঠিকঠাক পরীক্ষা করা হচ্ছে না এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে জনস্বার্থে মামলা করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। এই বিষয়ে কী কী ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে, ২৩ এপ্রিলের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তা জানানোর জন্য শুক্রবার রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই সঙ্গেই ওই বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, হু এবং আইসিএমআরের নির্দেশিকা সরকারের মেনে চলা দরকার। কোথায় কতটা করোনা সংক্রমণ হয়েছে, তা জানতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরীক্ষা চালানো প্রয়োজন এবং সেই পরীক্ষার হার দিন দিন আরও বাড়াতে হবে বলেও মনে করে ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এ দিন হাইকোর্টে একটি রিপোর্ট দিয়ে জানান, প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দিয়ে বুলেটিন প্রকাশ করা হচ্ছে। সেই বুলেটিন প্রতিনিয়ত প্রকাশ করা হচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের ওয়েবসাইটে। করোনা পরীক্ষার জন্য আইসিএমআর রাজ্যের সাতটি গবেষণাগারকে অনুমতি দিয়েছে। ওই সাতটি সংস্থার মধ্যে পাঁচটি সরকারি এবং দু’টি বেসরকারি।
রাজ্যে এখন প্রতিদিন তিনশোর বেশি লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং এই পরীক্ষার হার আরও বাড়ানো হবে বলে এজি এ দিন উচ্চ আদালতে জানান। তাঁর রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যে এ-পর্যন্ত ২,৫৮,৮০৭টি পিপিই বা বর্মবস্ত্র, ১,৫২,৪৬০ এন৯৫ মাস্ক এবং ৫৩,৭৬৯ লিটার হ্যান্ডস্যানিটাইজ়ার বা হাতশুদ্ধি সরবরাহ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কোথাও এখনও করোনাভাইরাসের গোষ্ঠী-সংক্রমণ হয়নি বলে এজি এ দিন আদালতে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের চালে কী হবে, সিদ্ধান্ত ঝুলেই
এজি জানান, এই জনস্বার্থ মামলা কোনও ভাবেই ধোপে টেকে না। কারণ এই মামলা করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে। যিনি এই মামলা করেছেন, সেই চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু এই মামলার আবেদনে তিনি সেই তথ্য গোপন করে গিয়েছেন।
এজি আরও জানান, মামলার আবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ মহামারির আকার নেবে। কিন্তু নিছক আশঙ্কার উপরে ভিত্তি করে এই ধরনের মামলা করা যায় না। তা ছাড়া এই মামলার সঙ্গে কোনও জনস্বার্থই জড়িত নেই।
আরও পড়ুন: আটকে পড়া শ্রমিকদের ‘স্নেহের পরশ’
আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও শামিম আহমেদ বলেন, এজি জানিয়েছেন, এ দিন সকাল পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারই জানিয়েছে, মারা গিয়েছেন ১০ জন। হু এই ভাইরাস সংক্রমণকে অতিমারি আখ্যা দিয়েছে। মামলা করা হয়েছে মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবে। চিকিৎসক, নার্স, অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে। আইনজীবীরা দাবি করেন, ‘কেরল মডেল’ অনুসরণ করুক রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে পরীক্ষা বাড়ানো দরকার। আক্রান্ত ও মৃতের যথাযথ তথ্য প্রকাশ করে নাগরিকদের আশ্বস্ত করুক সরকার।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)