প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে দু’হাজারের বেশি কোভিড-শয্যা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করার পরে রাজ্য সরকার এ বার কোভিড চিকিৎসায় আরও চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের পথে হাঁটছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোভিড চিকিৎসায় নতুন করে ২০০ জন চিকিৎসক এবং ১৫০০ নার্স নিয়োগ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এর পাশাপাশি সঙ্কটজনক রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেন ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয় আধুনিকীকরণও হবে।
অতিমারির দৌরাত্ম্যের মধ্যে কী ভাবে পুজো করতে হবে, বুধবার উচ্চ আদালতের রায়ে সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সামগ্রিক অর্থে এই রায়কে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখছে প্রশাসনের শীর্ষ মহল। মণ্ডপে লোকসংখ্যা বাড়িয়ে হাইকোর্ট এ দিন যে-সংশোধিত নির্দেশ দিয়েছে, তাতে পরিস্থিতি আরও সহজ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেই রায় অনুযায়ী প্রস্তুতি চালানোর সঙ্গে সঙ্গে কোভিড ব্যবস্থাপনায় বাড়তি জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। নতুন চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ তারই অঙ্গ।
যাদবপুরের কেএস রায় টিবি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেখানে নতুন আরও ১৩০টি কোভিড-শয্যার বন্দোবস্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার প্রশাসন জানিয়েছিল, গোটা রাজ্যে ২১৭৪টি কোভিড-শয্যা বাড়ছে। তার মধ্যে ১৯৩৯টি সাধারণ কোভিড-শয্যা এবং ৫৩৫টি আইসিইউ সুবিধাযুক্ত। কোভিড পরিস্থিতিতে দুর্গোৎসবে সম্ভাব্য বাড়তি সংক্রমণ নিয়ে প্রশাসনিক কর্তারা উদ্বিগ্ন। পুজোর পরে পরেই পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, এটা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৭৫ শতাংশ আক্রান্তই বাড়িতে, বাড়ছে বিপদ
আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে কাজ সম্ভব হলে প্রার্থনা কেন নয়
সঙ্কটজনক রোগীদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সব কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থাপনায় কোভিড রোগীদের চিকিৎসা পদ্ধতির উপরেও নজর রাখা হচ্ছে। লকডাউন পর্বে এক-একটি জেলার কোভিড ব্যবস্থাপনা তদারক করতে এক-এক জন অভিজ্ঞ আমলাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পদ্ধতি চালু রাখা হচ্ছে। কলকাতায় কোভিড নিয়ন্ত্রণের কাজে তদারকির দায়িত্বে আছেন স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী জেলা প্রশাসনগুলি ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শুরু করে দিয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার, মহাষষ্ঠী থেকেই নতুন ব্যবস্থা পুরোপুরি রূপায়ণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, আদালতের সোমবারের রায়ের পরেই বিভিন্ন জেলার অধিকাংশ পুজো উদ্যোক্তা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ শুরু করেছিলেন। ফলে প্রশাসনের সামনে নতুন কোনও সমস্যা তৈরি হবে না। পুলিশি সূত্রের খবর, কলকাতা বড় ও ছোট পুজো মণ্ডপগুলিতে পুলিশ মোতায়নের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ। ভিড় নিয়ন্ত্রণ-সহ গোটা পরিস্থিতির উপরে নজরদারি করবে তারা। তবে ব্যারিকেডের বাইরে ভিড় জমলে কী হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। “আদালতের রায়ের পরে নতুন করে আর বিধি প্রকাশ না-করলেও চলে। এমনিতেই কোভিড-সুরক্ষার বিধি মেনে রাজ্যের সর্বত্র পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন,” বলেন এক প্রশাসনিক কর্তা।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)