ছবি: এএফপি।
রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ফের বাড়ল। শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানিয়েছেন, করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২ হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন। ফলে, সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৮ জন। তবে এর মধ্যেই স্বস্তির খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
এ দিন সব জেলার স্বাস্থ্যকর্তা এবং হাসপাতাল সুপারদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেই বৈঠকের পর মুখ্যসচিব জানান, খুব শীঘ্রই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ‘র্যাপিড টেস্ট’ শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘‘র্যাপিড টেস্টের জন্য আমরা তৈরি আছি। কিট পেলেই পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হবে। কোথাও কোনও খবর পেলেই টেস্ট করা হচ্ছে এখন।’’ একইসঙ্গে তিনি জানান, রাজ্যে এই মুহূর্তে ৮টি জায়গায় করোনা-পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার মধ্যে তিনটি বেসরকারি ল্যাবরেটরি রয়েছে। ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। যে আটটি জায়গায় করোনা-পরীক্ষা হচ্ছে— ১. নাইসেড, ২. এসএসকেএম, ৩. মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ৪. উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ৫. স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, ৬. অ্যাপোলো হাসপাতাল, ৭. টাটা মেডিক্যাল সেন্টার এবং ৮. ডক্টর লাল’স প্যাথল্যাব।
রাজ্যের ১০ জেলায় নতুন করে কোনও ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হননি বলে এ দিন দাবি করেছেন মুখ্যসচিব। গত কয়েক দিনে কলকাতা এবং হাওড়া থেকেই সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি খবর মিলেছে। তবে, এ দিনই হাওড়ায় করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর মিলেছে। তিনি ভর্তি হাওড়ার সত্যবালা আইডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে যদিও এ খবররে সত্যতা মেলেনি। একটি পরিসংখ্যান দিয়ে এ দিন মুখ্যচসিব জানান, হাওড়ায় ৫৮৯ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৬২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তিনি জানান, করোনা মোকাবিলায় হাওড়া-কলকাতায় একটি কমপোজিট টিম তৈরি করা হচ্ছে। সেখান পুলিস-প্রশাসন-পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা থাকবেন। শুধু তাই নয়, প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নোডাল অফিসারও নিয়োগ করা হয়েছে। যে এলাকায় ২০০-৪০০টির বেশি বাড়ি রয়েছে সেখানেওএকই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কলকাতার বহু পাড়া পুরো সিল করল পুলিশ, দেখে নিন কোথায় কোথায়
রাজ্যের ৬৬টি কোভিড হাসপাতালে মোট ৭ হাজার ৯৬৯টি আইসোলেশন বেড রয়েছে বলে এ দিন জানান মুখ্যসচিব। তাঁর দাবি,সেখানে মাত্র ১৭৮জন ভর্তি রয়েছেন। সরকারি হাসপাপাতালে ৩ হাজার ৮৫৮জন কোয়রান্টিনে রয়েছে। বাড়িতে কোয়রান্টিনে রয়েছেন ৩৫ হাজার ২০৯জন। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘কেউ অসুস্থ বোধ করলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসুন। আমাদের সব রকমের প্রস্তুতি রয়েছে। পরিকাঠামোওরয়েছে। যত তাড়াতাড়ি অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে আসবেন, সংক্রমণ ছড়ানোর মাত্রা ততই কমবে।’’
আরও পড়ুন: হাওড়ায় বেড়েই চলেছে সংক্রমণ, বহু এলাকা সিল, ভিড় হলেই লাঠি
ভিন্রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পর্কে এ দিন মুখ্যসচিব জানান, সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে। কোথাও কারও অসুবিধা হচ্ছে, জানতে পারলেই স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফে। এ নিয়ে একটি অ্যাপও চালু হচ্ছে। তার নাম ‘স্নেহের পরশ’। সেখানে জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। ওই অ্যাপের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের টাকা পাঠানোর ব্যবস্থাও করা যাবে বলে দাবি তাঁর।