প্রতীকী ছবি।
কোন কোভিড হাসপাতালে কত শয্যা আছে তার হিসেব প্রতি দিনই দেয় স্বাস্থ্য দফতর। সেই হিসেব মত শয্যা ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও যে কোথাও কোথাও রোগীকে ভর্তি করতে ‘ঘুষ’ নিচ্ছে অসাধু চক্র তা প্রমাণ হয়ে গেল কল্যাণীতে কোভিড হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের এক অস্থায়ী কর্মীকে শনিবারই পুলিশ আটক করেছিল। রবিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সঙ্গে আর কারা এই চক্রে যুক্ত ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ধৃত কর্মীর নাম শুকদেব মধু। শুক্রবার সন্ধ্যায় এক রোগীর বাড়ির লোকজন তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তোলে। উত্তর ২৪ পরগনার ওই পরিবারটির অভিযোগ ছিল, নদিয়ার কল্যাণীতে সরকারি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য শুকদেব প্রথমে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়ে।ছিল। দরাদরি করে পরে ১০ হাজার টাকায় রফা হয়। এর পর সেন্টু অধিকারী নামে ওই রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু তাঁর বাড়ির লোক শুকদেবকে টাকা দেওয়ার আগেই তিনি মারা যান। সেই কথা চেপে গিয়ে শুকদেব ১০ হাজার টাকা নেয় বলে অভিযোগ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা নিয়ে কোভিড হাসপাতালের চত্বরে হইচই পড়ে যায়। অন্তত আরও দুই রোগীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ আসে শুকদেব বিরুদ্ধে। পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে কল্যাণী থানায় নিয়ে আসে। তবে শুধু শুকদেব নন, হাসপাতালের আরও কয়েক জন কর্মী কোভিড আক্রান্তদের পরিবারের থেকে অসাধু উপায়ে টাকা নেওয়ার চক্রে জড়িত বলে অভিযোগ উঠছে। কখনও রোগী ভর্তির জন্য, কখনও ভর্তি থাকা রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার বিনিময়ে এরা মোটা টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ। কিন্তু বাড়ির লোক ভর্তি থাকায় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় এত দিন কেউ অভিযোগ করেননি।
শনিবার কোভিড হাসপাতালে শুকদেবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন মৃত সেন্টু অধিকারীর দিদি বুলা অধিকারী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর পদক্ষেপ করে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্ত শুকদেব মধুর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা পুলিশ মামলা রুজু করেছে। ওকে তো বটেই, ওর সঙ্গে আরও যারা যুক্ত ছিল তাদেরও কাজ থেকে বরখস্ত করা হয়েছে।” বাকিদেরও পুলিশ গ্রেফতার করল না কেন? অপরেশবাবু বলেন, “রোগীর বাড়ির লোক শুকদেব মধুর নামে অভিযুক্ত করায় শুধু তার বিরুদ্ধেই আইনি পদক্ষেপ করা গিয়েছে।”\