নজরদারি: শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার এলাকা পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল। শনিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
উত্তরবঙ্গে আসা প্রতিনিধিদলও এ বারে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে চিঠি দিল মুখ্যসচিবকে। সেই চিঠির একটি প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারের কাছেও। শুক্রবার রাতে এই পত্র পাঠানোর পরে শনিবার অবশ্য কেন্দ্রীয় দলটি শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার পরিদর্শন করে কালিম্পংয়েও ঘুরে আসে। এরই মধ্যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কেন্দ্রীয় দলটি সমালোচনা করে বলেন, ‘‘যে সব রাজ্যে করোনা বেশি করে ছড়িয়েছে, ওঁরা সেখানে গিয়ে পরামর্শ দিন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখানে এসে ঘুরে ওঁরা আমাদের আধিকারিকদের সময় নষ্ট করছেন। আমাদের কাজেও ব্যাঘাত ঘটছে। বিনয়ের সঙ্গে বলব, তাঁরা ফিরে গিয়ে যে রাজ্যগুলিতে বেশি আক্রান্ত রয়েছে, সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করুন, পরামর্শ দিন।”
লকডাউন মেনে চলার ক্ষেত্রে যে কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে, সে কথা আগেই বলেছিল উত্তরবঙ্গে সফররত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলটি। দলটির তরফে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, লকডাউন কঠোর ভাবে কার্যকর করা দরকার যাতে সংক্রমণ বিশেষ ছড়াতে না পারে। তা নজরদারির জন্য বেশি সংখ্যায় ‘ফিল্ড অফিসার’ থাকার কথা জানিয়েছেন। অভিযোগ, তাঁরা শিলিগুড়ডিতে আসার পর ২২ এপ্রিল বিভাগীয় কমিশনার এবং দার্জিলিঙের জেলাশাসকের সঙ্গে এবং পরদিন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠকে আরও যে তথ্য চাওয়া হয়েছিল, সেগুলি এখনও মেলেনি। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করতে চাইলেও তিনি সময় দেননি বলে অভিযোগ। রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং লকডাউন পরিস্থিতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে সব কিছু যে অনেক ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না, সে কথাও জানিয়েছেন তাঁরা। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্ব বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এসেছে বলে শুনেছি। তবে আমাকে ডেকেছে বলে জানা নেই। এমন কোনও চিঠি পাইনি।’’ প্রশাসনের তরফে আর কেউ কিছু বলতে চাননি।
শনিবার বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার ঘুরে কালিম্পঙের উদ্দেশে রওনা হয় দলটি। দলের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন তাঁদের সঙ্গে রাজ্যের তরফে কোনও আধিকারিক ছিল না। অপরিচিত এলাকায় কোথায় তাঁরা যাবেন, বুঝতে পারছিলেন না। শেষে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করে করোনায় কালিম্পঙের বাসিন্দা ওই মৃতার বাড়ি ওমদেন রোডে পৌঁছন তাঁরা, জানিয়েছেন ওই দলের সদস্যরা। সেখানকার কনটেনমেন্ট জ়োনে ঘোরেন। সেখানে আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন বলেও জানা গিয়েছে। এর পরে ১০ মাইল ফটকেও যান। দুই-এক জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা।
পরে দলের সদস্য অজয় গঙ্গোয়ার বলেন, ‘‘আমাদের এখানে আসতে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে আমাদের সঙ্গে কোনও আধিকারিক ছিলেন না। জেলাশাসক সময় দিতে পারেননি। তিনি ব্যস্ত। আমরা এলাকা চিনি না। প্রশাসনের কেউ সঙ্গে ছিলেন না। তাতে সমস্যা হয়।’’ তবে কত রোগী, কত কোয়রান্টিন কেন্দ্র রয়েছে, সেই তথ্যগুলি দেওয়া হয়েছিল বলেই জানান তাঁরা। এ দিনই তাঁরা কালিম্পং থেকে শিলিগুড়িতে ফেরেন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য পরিষেবায় আক্রান্তের কমতি নেই