State News

জনতা কার্ফুতে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলল রাজ্যে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা জনতা কার্ফুতে রবিবার সার্বিক ভাবে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পড়ল এ রাজ্যে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৫:০২
Share:

ছবি: এএফপি।

কেউ ঘর-সংসারের কাজে সময় কাটালেন। কেউ ডুব দিলেন বইয়ের জগতে। কেউ আবার টিভিতে বা সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা জনতা কার্ফুতে রবিবার সার্বিক ভাবে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পড়ল এ রাজ্যে। উত্তর থেকে দক্ষিণ— প্রায় সর্বত্রই রাস্তাঘাট সুনসান, দোকানপাট কার্যত বন্ধ, যানবাহন হাতেগোনা। তাতে যাত্রী ছিল না বললেই চলে।

ব্যতিক্রমী ছবি ছিল না এমন নয়। কোথাও চায়ের দোকানে, কোথাও মাংসের দোকানে, কোথাও ১০০ দিনের কাজে ভিড় দেখা গিয়েছে। চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে বালুরঘাট, ইংরেজবাজার, শিলিগুড়ির একাধিক জায়গায় চুটিয়ে ফুটবল বা ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছে। গোষ্ঠী সংক্রমণ ঠেকাতেই যেখানে ঘরে থাকতে বলা হয়েছিল, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ মতো তালি-ঘণ্টা বাজাতে পথেও নেমে পড়েন অনেকে। বসিরহাট শহর-সহ উত্তর ২৪ পরগনার বহু এলাকায় রাস্তায় ভিড় করে শাঁখ, কাঁসর-ঘণ্টা, থালা বাজাতে থাকেন সকলে মিলে। এমনকি, শিশুদেরও এই জমায়েতে টেনে আনা হয়। বাঁকুড়ার অনেক জায়গায় ছুটির দিনের মেজাজে পাড়ায় পাড়ায় জটলা করে আড্ডা দেখা গিয়েছে। মাংসের দোকানে ভিড় ছিল হুগলির চুঁচুড়া-সহ কিছু এলাকায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: এনআরএসে গড়া হচ্ছে ৩০০ জনের চিকিৎসার পরিকাঠামো

সকালে অবশ্য ছিল অন্য ছবি। পূর্ব বর্ধমানে কিছু বাজার বসলেও বেলা বাড়তেই ক্রেতা-বিক্রেতা কাউকেই আর দেখা যায়নি। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার শিল্পাঞ্চল কার্যত স্তব্ধ ছিল এ দিন। অল্প কিছু শ্রমিক কাজে যোগ দেন। পশ্চিম বর্ধমানে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে (ডিএসপি) ৮০-৮৫ শতাংশ কর্মী-হাজিরা ছিল। তবে, ইসিএল-এর কয়লা উত্তোলন অন্য দিনের তুলনায় কম ছিল। জরুরি বিভাগ ছাড়া কাজ হয়নি চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কর্স-এও (সিএলডব্লিউ)। বার্নপুর ইস্কোয় ব্লাস্ট ফার্নেস গরম রাখার কাজে যুক্ত কর্মীরা ও সংস্থার জরুরি বিভাগ চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মীরা ছাড়া অন্যদের কারখানায় আসতে নিষেধ করা হয়। জেলার সমস্ত বাজার খোলেনি। পথে নামেননি বাসিন্দারা।

মুর্শিদাবাদ ছিল প্রায় ফাঁকা। বন‌্ধের অন্যতম চেনা চিত্র, গলি-ক্রিকেটও উধাও। এরই মাঝে জেলার কয়েকটি স্কুলে মিড-ডে মিলের চাল-আলু সংগ্রহ করতে অভিভাবকদের হাল্কা ভিড় দেখা গেলেও বেলা বাড়তেই তা ফাঁকা হয়ে যায়। তবে বেলা ১১টা নাগাদ নাগাদ ভিন্‌ দেশ এবং রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বেশ কিছু শ্রমিককে নিয়ে পরিবহণ দফতরের পাঁচটি বাস বহরমপুরে আসে। পুলিশ সেই শ্রমিকদের জেলা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়।

জল সরবরাহের কাজে যুক্ত কর্মীরা অনুপস্থিত থাকায় পুরুলিয়ার ঝালদা শহরের বাসিন্দারা আবার সারাদিন জলই পাননি। হাওড়া, হুগলি, বীরভূম এবং মেদিনীপুরের তিন জেলাও কার্যত ঘরবন্দি হয়ে কাটাল। রবিবার সকাল থেকেই মেদিনীপুর শহরের কালেক্টরেট মোড়, এলআইসি মোড়, কেরানিতলা, কলেজ মোড়ের মতো শহরের জনবহুল এলাকাগুলি ছিল একেবারেই ফাঁকা। সুনসান ছিল দাঁতনও। বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন খড়্গপুরে এলেও স্টেশন চত্বর অন্য দিনের তুলনায় ছিল কা। শনিবার রাত থেকেই ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল ঝাড়গ্রাম। রবিবার রেলশহর খড়্গপুরেও সর্বত্রই দোকানপাট বন্ধ ছিল। গড়বেতায় আবার জনতা কার্ফুর মধ্যেই চলল করোনা-সচেতনতা অভিযান। সৈকত শহর দিঘাও ছিল প্রায় ফাঁকাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement