প্রতীকী ছবি
অনেক জায়গাতেই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ বা বাড়ি থেকে দফতরের কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু আর-দশটা জরুরি পরিষেবার মতো বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল বা এটিসি-র অফিসারেরা তা করতে পারেন না। মাটিতে বসে আকাশে বিমানের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁরা। সেটা বন্ধ হয়ে গেলে বন্ধ করে দিতে হবে আকাশপথ। সেই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য করোনা-আতঙ্কে বিএ বা ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার (মদ্য পান করেছেন কি না, তা যাচাই) পরীক্ষা বাতিল করতে চান এটিসি অফিসারেরা। সারা দেশ থেকেই এই দাবি উঠছে।
সোমবার উত্তর ভারতের একটি শহরে এটিসি অফিসারেরা বিএ পরীক্ষা দিতে রাজি হননি। মঙ্গলবার কলকাতায় এটিসি অফিসারদের সংগঠনের নেতা কৈলাসপতি মণ্ডল ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর কর্তা এবং কর্তৃপক্ষের রিজিয়নাল এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টরকে চিঠি লিখে আপাতত এই পরীক্ষা স্থগিত রাখতে অনুরোধ করেছেন। তাঁর দাবি, প্রত্যেক এটিসি অফিসার যথেষ্ট দায়িত্ববান। এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে আসার সময় কেউ মদ্য পান করবেন না। গত ২ অক্টোবর দেশ জুড়ে বিএ পরীক্ষা চালু হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত মুম্বইয়ে একটি মাত্র ঘটনায় এক জনের পজ়িটিভ এসেছে। সেটাও প্রস্তাবিত মাত্রার মধ্যে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর, এই পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করতে নারাজ ডিজিসিএ।
বিএ পরীক্ষা করাতে ভয় কেন?
বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের এক কর্তার কথা জানান, যে-ব্লো পাইপ দিয়ে বিএ পরীক্ষা করা হয়, তার উপরে ভরসা নেই অফিসারদের। যদিও প্রত্যেক অফিসারের জন্য আলাদ ব্লো পাইপ রয়েছে। আশঙ্কা, যাঁরা পরীক্ষা দিচ্ছেন, তাঁদের কারও শরীরে তাঁর অজান্তে করোনাভাইরাস থাকলে একসঙ্গে পরপর বিএ পরীক্ষার সময় অন্য অফিসারের শরীরে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে। কর্তা বলেন, ‘‘যাঁর সংক্রমণ হবে, তাঁর যা ক্ষতি হওয়ার তা তো হবেই। কিন্তু আরও বড় বিপদ আছে। এটিসি-তে একই হেডফোন ব্যবহার করেন নানা অফিসার। বিভিন্ন শিফটে একই কি-বোর্ডের সামনে বসে তাঁদের কাজ করতে হয়। এই অবস্থায় এক জন অফিসারকে যদি করোনায় ধরে, তা হলে অন্য অফিসারেরা কাজ করতে রাজি হবেন না।’’
আর অফিসারেরা কাজ করতে না-চাইলে ভারতের আকাশ দিয়ে কোনও বিমানই ওঠানামা করতে পারবে না। সোমবার দিল্লিতে এই বিষয়ে জরুরি বৈঠক বসে ডিজিসিএ-র দফতরে। কারণ, বিএ পরীক্ষার নির্দেশ এসেছিল সেখান থেকেই। মঙ্গলবারেও বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ এবং ডিজিসিএ-র সঙ্গে বেশ কয়েক বার আলাপ-আলোচনা হয়। যদিও সেখানে কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি।