Coronavirus

করোনায় আরও চার জনের মৃত্যু রাজ্যে, নতুন করে আক্রান্ত ১১২, জানালেন স্বরাষ্ট্র সচিব

মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল ১৪৫৬। গত ২৪ ঘন্টায় এক জন করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২৬৫ জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ১৯:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও চার জনের মৃত্যু হল। এই নিয়ে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭২। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১১২ জন। ফলে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল ১৪৫৬। গত ২৪ ঘন্টায় এক জন করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২৬৫ জন। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই তথ্য তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

অন্য দিকে এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানিয়েছেন, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে কোভিড-১৯ হাসপাতাল করা হচ্ছে। শয্যার সংখ্যা ৫০০। এই নিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৬৮টি কোভিড হাসপাতাল হল।

ভিন রাজ্যে আটকে পড়া থেকে শুরু করে করোনা টেস্ট, কোভিড-১৯ হাসপাতালের সংখ্যা বাড়ানো-সহ করোনা মোকাবিলায় সব রকমের পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, “প্রতিদিন করোনা টেস্টের সংখ্যা আগের থেকে বেড়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে ১০টি সরকারি এবং পাঁচটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে কোভিড-১৯ টেস্ট হচ্ছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে। আরও ১০টি হাসপাতালে টেস্টের জন্য আইসিএমআর-এর কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।”

Advertisement

করোনা মোকাবিলায় কী ভাবে রাজ্য সরকার নানা পদক্ষেপ করছে, তার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই এনআরএস এবং বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে কোভিড-১৯ টেস্ট শুরু হবে। অনুমতির অপেক্ষায় আছি। এক মাস আগেও যেখানে দিনে ২৫০টি টেস্ট হত। এখন দিনে আড়াই হাজার টেস্ট হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় টেস্ট হয়েছে ২৫৭০ জনের। এখনও পর্যন্ত মোট ৩০ হাজার ১৪১ জনের টেস্ট হয়েছে। সেই সঙ্গে পুল টেস্টিং-সহ নানা ধরনের টেস্টের বিষয়েও রাজ্য যথেষ্টই তৎপর।’’

আরও পড়ুন: বোর্ডের মেয়াদ শেষ, প্রশাসক ববির হাতে কলকাতা, চ্যালেঞ্জের পথে বিজেপি

শুধু টেস্টই নয়, তিনি রাজ্যে হাসপাতালগুলির চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, “আমাদের রাজ্যে এখন ২৭১টি আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তার প্রয়োজন পড়েনি। এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩০টি ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা সম্পন্ন বেডে-এর প্রয়োজন পড়েছে। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইমেন্ট (পিপিই), স্যানিটাইজার, মাস্ক সহ চিকিৎসার প্রয়োজনে যাবতীয় সরঞ্জাম চিকিৎসক, নার্স এবং পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।”

ভিন রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিক, তীর্থযাত্রী থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীদের রাজ্যে ফেরাতেও উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, প্রতিবেশী রাজ্য বিহার, ঝাড়খণ্ড, সিকিম, ওড়িশা, অসম-সহ মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাতে অনেকেই আটকে রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে আমাদের প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তার একটি নির্দিষ্ট তালিকাও রয়েছে সরকারের কাছে। যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের লালরসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। সে কারণে, সবাইকে একসঙ্গে ফেরাতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই।

আরও পড়ুন: বাড়িতে গৃহ সহায়িকারা কি এখন আসতে পারেন? কী বলছে সরকারি নির্দেশ

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মানুষজনকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা হচ্ছে। সেগুলি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান আলাপন। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যেই কোটা থেকে তিন হাজার পড়ুয়াকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকেরাও ফিরছেন। আমি নিজে উত্তরপ্রদেশ, বিহার-সহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। হোয়াটসঅ্যাপ করা হয়েছে। এ রাজ্যের বাসিন্দাদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে রাজ্য কোনও খামতি রাখছে না।”

তিনি এ বিষয়ে ‘এন্ট্রি অ্যাপ’-এর বিষয়টি উল্লেখ করেন। স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, যাঁদের ছোট গাড়ি আছে বা বাসে ফিরতে চান তাঁরা ফিরতে পারেন। তাঁরা ওই অ্যাপে তথ্য দিয়ে রাজ্যে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেন। অথবা ‘এগিয়ে বাংলা’ ওয়েবসাইটে গিয়েও বিস্তারিত জানতে পারবেন। এছাড়াও আরও একটি অ্যাপ চালু করা হচ্ছে।

গ্রিন জোনে বেশ কিছু বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। এ বিষয়ে তিনি জানান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পারমিশনের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৯৮টি আবেদনে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। সাত হাজার ৯০৭টি আবেদন বিবেচনা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement