রুকবানুরের নামে পোস্টার ঘিরে শোরগোল
চাকরির জন্য যাঁরা অগ্রিম টাকা দিয়েছেন, তাঁরা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টাকা ফেরত নিয়ে যাবেন। এই মর্মে পোস্টার পড়ল নদিয়ার চাপড়া বিধানসভা এলাকায়। পোস্টারে মূল বয়ানের নীচে লেখা চাপড়ার তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমানের নাম। ঠিকানা-সহ রয়েছে চাপড়া ব্লক সভাপতি শুকদেব ব্রহ্ম ও তাঁর ভাই জয়দেহ ব্রহ্মের নামও। শাসকদলের বিরুদ্ধে ‘নিয়োগ-দুর্নীতি’র অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। সেই আবহে সোমবার চাপড়ার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূল বিধায়কের নামে এমন বিজ্ঞপ্তি-পোস্টারে শোরগোল পড়ে যায়। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি। যদিও ওই পোস্টার সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন রুকবানুর। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে এটা বিরোধীদের চক্রান্ত।’’
পোস্টারের বয়ানে লেখা, ‘এতদ্বারা চাপড়া ব্লকের সকল অধিবাসীবৃন্দকে জানানো যাইতেছে যে, সকল শিক্ষিত যুবক যুবতী চাকরি পাওয়ার জন্য অ্যাডভান্স টাকা দিয়েছেন, তাদের এই মুহূর্তে চাকরি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই কারণে তাদের টাকা ফেরত দিয়ে দেয়া হবে। যারা চাকরির জন্য অগ্রিম টাকা দিয়েছেন, তাদের অনুরোধ করা যাচ্ছে, তারা যেন নিম্নে বর্ণিত ঠিকানায় নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজ নিজ টাকা ফেরত লইয়া যান।’ কত দিনের মধ্যে এবং কোথা থেকে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে, সেই সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে পোস্টারে। লেখা, ‘সকলকে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ এর মধ্যে অগ্রিম প্রদত্ত টাকা ফেরত দিয়ে দেয়া হবে। নিম্নে বর্ণিত ঠিকানায় নিম্নোক্ত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।’
এই পোস্টার প্রকাশ্যে আসার পরেই রুকবানুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের ভিত্তিহীন কুৎসার জবাব দেওয়ার কোনও ভাষা আমার নেই। বিজেপি-সিপিএম চক্রান্ত করে আমার ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছে।’’ এই ‘চক্রান্তে’ তৃণমূলের এক গোষ্ঠীও জড়িত থাকতে বলে আশঙ্কা করেছেন রুকবানুর। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে শুকদেব-জয়দেবের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দু’জনেরই ফোন বন্ধ ছিল।
টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে ইতিমধ্যেই নদিয়ার বেশ কয়েক জন তৃণমূল বিধায়কের নাম জড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়, তেহট্টের বিধায়ক তাপসকুমার সাহা। এসএসসি এবং টেট ‘দুর্নীতি’-কাণ্ডে পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যেরও নাম জড়িয়েছে। বেশ কয়েক বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখিও হয়েছেন মানিক। নদিয়ার আরও এক বিধায়কের বিরুদ্ধে চাকরির নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির নদিয়া উত্তর সংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘নদিয়ার একের পর এক বিধায়কের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠছে। আর যে কোন ক’জন বাকি আছে! তাঁদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠলে অবাক হব না। তৃণমূল নামক একটি চোরদের দল।’’